পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

---- দাও, কাগজের প্রথম পাতাটা দাও তো। শুভমনের সেঞ্চুরির খবরটা একবার দেখি। স্বপ্নময়ের দিকে হাত বাড়িয়ে দিল শুভমন।

Read more


এক বেল বাজাতে গিয়েও হাতটা সরিয়ে নেয় কাবেরী। “ছক্কা আ আ আ “ উল্লসিত চিৎকার অর্কর, “আমার সব ঘুঁটি বেরিয়ে গেল,তুমি এখন ঘরে বসে বসে পচে মর’।” “বাবু, তুমি কিন্তু চোট্টামি করছ। তখন পষ্ট দেখেছি, তোমার দুই পড়েছে। তুমি তিন বলে চালিয়ে দিলে আর আমার পাকা ঘুঁটিটা কেটে দিলে।“ প্রাণপনে প্রতিবাদ করে বকুল। বকুল, মানে অর্কর ‘আটাপিসি’।

Read more


নাগিব মহফুজ এক মিশরীয় সাহিত্যিক। মরুময় মিশরে উদ্যানসম তাঁর সাহিত্যসৃষ্টি। মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে কঠোর ইসলামি অনুশাসনে জন্ম ১১, ডিসেম্বর, ১৯১১। অল্পবয়সে মিশরীয় বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেন। সেই বিপ্লবের একটা বড় প্রভাব তাঁর সাহিত্যকর্মে প্রতিফলিত হয়েছে। মাত্র ১৭ বছর বয়সে থেকে প্রায় অর্ধশতকেরও বেশি সময় ধরে আরবের সাহিত্যাকাশে তিনি এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। অস্তিত্ববাদী লেখকদের মধ্যে প্রথম সারিতে তাঁর অবস্থান। সাহিত্যজীবনের প্রারম্ভে তাহা হুসেন, হাফিজ নাজিব, সালামা মৌসা প্রমুখ লেখক ও বুদ্ধিজীবিদের দ্বারা তিনি প্রভাবিত হন। ১৯৮৮ সালে নোবেল সাহিত্য পুরস্কার পান।

Read more


ইলেকশন আসা মানেই সরকারি কর্মচারীদের বাঁশ ! এ সত্যি কথাটা কেউ লেখে না । তিন দিন ধরে ট্রেনিংয়ে যাও , ভোটের আগের দিন লাইনে দাঁড়িয়ে ব্যালট পেপার থেকে শুরু করে ছুঁচটি অব্দি বুঝে নিয়ে গাছ তলায় চট পেতে বসে সব মেলাও , তারপর হন্যে হয়ে তোমার অন্য ভোট সহকর্মীদের খুঁজে নাও, তারপর স্ট্যান্ডে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অজস্র বাসের মধ্যে নির্দিষ্ট বাসটিকে খুঁজে নিয়ে আবার অপেক্ষা করতে থাকো ওই বাসটি আরো দুটি ভোটকেন্দ্রের লোকজন, মালপত্তর সমেত কখন ছাড়ে !

Read more


ডান হাতে স্টিয়ারিং সামলে অন্য হাত দিয়ে ড্যাশবোর্ডের উপর থেকে বিড়ির প্যাকেটটাকে তুলল রবিন। এরপর প্যাকেটের ফুটোটাকে ঠোঁটের কাছে আনল। এবার বাঁ হাতে ধরে-রাখা প্যাকেটের বিড়িগুলিতে আঙুল বুলিয়ে সুবিধামতো একটাকে বুড়ো আঙুলের সঙ্গে অন্য আর একটা আঙুল দিয়ে চেপে ধরে ঠোঁটের দিকে চাগিয়ে রাখা প্যাকেটের ফুটোটার দিকে ঠেলতে শুরু করল। বিড়ির লেজটাকে কোনও মতে ফুটোর বাইরে বের করতে পারলেই উজিয়ে রাখা ঠোঁটদুটি দিয়ে বিড়িটাকে চেপে ধরবে সে।

Read more


এবারের সহমনের গল্প- শতদ্রু, মিশুক আর উপমার গল্প।

Read more


ছুটে এসেই বাসটা ধরে অরণ্যা। আজ বেশ দেরিই হল। স্টপে পৌঁছনো মাত্রই নিজের গন্তব্যের বাস পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। লটারির টিকিট কাটলে হত।

Read more


বাবা মারা যাওয়ার পর এক ঝড়ের রাতে কে যেন আমার মায়ের ঘরের দরজায় কড়া নেড়েছিল। তখন আমি মায়ের পাশেই শুয়েছিলাম। বয়স কত ছিল, ঠিক মনে নাই। মা চৌকির নিচ থেকে দা নিয়ে দরজার কাছে গিয়ে বলল, ‘কে রে? এত রাইতে কি চাস?’

Read more


—হেয়ার ম্যাসেজ নেবে, দিদি? —দিলে তো খুব ভাল হয় রে। চুলের যা অবস্থা। চুলের গুছি ভাগকরে গোড়ায় গোড়ায় তেল দিয়ে নিপুণভাবে হাত চালাতে শুরু করে কোয়েল। আরামে মধুর চোখ বুজে আসে। মুখ ফস্কে প্রশ্ন করে ফেলে, এতদিন আসিসনি কেন রে, কোয়েল?

Read more


যেদিন ওরা তোমায় নিয়ে গেল, সেই মুহূর্তে আমি তোমার পাশে উপস্থিত ছিলাম না। এখন তুমি যেখানে আছ, তা তোমার জন্য স্বর্গ হবে নাকি বধ্যভূমি, সেটার সম্পূর্ণ দায়িত্ব তোমার উপর। তোমার জীবনের পরিণতি কোন দিকে যাবে, সে অনিশ্চয়তার কথা ভেবে মা হিসেবে আমার উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত, কিন্তু, আমাদের এই ক্ষুদ্র জীবনচক্রে সন্তানের জন্য চিন্তা করার কোনও অবকাশ নেই।

Read more


লাল টাই আর ধবধবে সাদা ইউনিফর্ম পরে তিন্নি দাদুর সামনে এসে দাঁড়াল । ‘দাদু ,এই দেখ আমার নতুন ড্রেস।’ এখন সকাল আটটা । তিন্নি এখানকার নামি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে। এ বছর ক্লাস ফাইভে উঠল । প্রত্যেক বছর নতুন ক্লাসে উঠলেই তিন্নিকে দু সেট ইউনিফর্ম বানিয়ে দেওয়া হয়। পুরোনোগুলো ভালো থাকলেও বাতিল হয়ে যায় ।

Read more


আমার নাম গোবর্ধন। মা ডাকত খোকা। কিন্তু বন্ধুরা ডাকত গোবরা। বলত --- শালা, তোর মাথায় গোবর পোরা। মাথা নিয়ে আমার দুটো সমস্যা। শাকপোস্ত আর গোবর। শাকপোস্তে পরে আসছি, আগে গোবর।

Read more


কলিং বেলের ঝনঝন আওয়াজ গোটা বাড়ি জুড়ে বেজে উঠতেই নবেন্দু দরজা খুলে দেখল সামনে পল্টু দাঁড়িয়ে আছে । সঙ্গে একটা ছেলেকে নিয়ে এসেছে পল্টু । বছর পঁচিশ ছাব্বিশ বয়স হবে ছেলেটার । কাঁধ অবধি ঝাঁকড়া চুল , গলায় সোনার চেন । নবেন্দুর অস্বস্তি হচ্ছিল । অসহিষ্ণু গলায় বলল, “তুই এখন ? এই ভরসন্ধ্যাবেলায় ? “যা বলার তাড়াতাড়ি বল। আমাকে একটু বেরোতে হবে।"

Read more


' ভালো করে হাতটা জড়িয়ে ধর, নইলে ফেসবুকে ছবি দেখে মানুষ ভাববে আমরা ভালো বন্ধু না। ' নাসরিনকে বলা রিপার কথাগুলো খুব জোরে এসে ধাক্কা দেয় গ্রুপ ছবির এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকা আমার মনের দেয়ালে। এইতো, কয়েকদিন আগে রিপা ফোন করে আমার কাছে নাসরিন সম্পর্কে অনেক অভিযোগ করলো। নাসরিন নাকি ওর পেছনে লেগে থাকে অকারণেই, সুযোগ পেলে খোঁচা মারে, লেখালেখিতে ঈর্ষা করে, টিপ্পনী কাটে ওর পোশাক নিয়ে।

Read more


লতার ঘরে আমার যাতায়াত পুরনো। বাগদী পাড়ার এই মেঠো রাস্তায় অমাবস্যার রাতেও আমার পা হড়কায়না। মেঠো রাস্তাটার মতো লতার গোটা শরীরটাও আমার মুখস্থ। খাজ-ভাজ-গুলি- ডাংগুলি সব চেনা। কোথায় কখন জিভ লাগাতে হয়,কখন আঙ্গুলের ডগা চালাতে হয় এবং তাতে কি এবং কেন হয় সব আমার মুখস্থ।

Read more


-এই ক্যাপ্টেন, দু’টো বিপি দাও। -কেমন আছেন? দেখিনি তো অনেকদিন। -অনেকদিন কোথায়? এই সপ্তাহ তিনেক। বাইরে গেছিলাম... জলদি দাও

Read more


শালুর বিয়ে স্থির হয়ে গেল। পাত্র তার থেকে ষোলো বছরের বড়। পাত্র মানে সোনার আংটি। তা আবার বাঁকা হয় কখনো! তাই তার বয়স নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যথা হলো না। খানিকটা প্রতিবাদের সুরে কেবল রাহী পিসি বললে- “সোনাতে খাদ মেশানো থাকে, খাঁটি সোনাতে অলংকার হয় না। তাই একটু দেখে শুনে নিলে হতো না!”

Read more


গাঢ় অন্ধকারে কিছুই ঠাহর করা যাচ্ছে না। কালো মেঘের বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে আসা বিদ্যুতের আলোয় পদ্মার ভয়ঙ্কর রূপ ঠিকরে আসছে। শান্ত জল অশান্ত হয়ে উঠেছে। সহস্র ফণা তুলে ফোঁস ফোঁস করতে করতে এগিয়ে আসছে। সাদা ফেনায় ফুলে উঠেছে। রাগে ফুঁসছে। গগনবিদারী তর্জন গর্জন। ‌বারবার নৌকার উপর আছড়ে পড়ছে। নৌকা টালমাটাল। নাসির প্রাণপণ দাঁড় বাইছে। কিন্তু প্রকৃতির এই রুদ্র মূর্তির পাশে সবকিছু তুচ্ছ। আচমকা নৌকায় জল ঢুকছে। নৌকার তলা ফেটে গেছে। তলিয়ে যাচ্ছে নৌকা। আর নাসির জলের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে।

Read more


খস খস খস। ধান বেরিয়ে এলো। মাটিমেশা ধান। মাপের এককে হিসেব করলে এক কেজিতে একশ গ্রাম ধান আর বাকিটা মাটি। কাঠির মত হাতটা ভেতরে যাচ্ছে। খড়খড়ে আঙুল গুলো মাটি খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বের করে আনছে মাটি মেশা ধান। আঙুল গুলো যেন পণ করেছে একটি ধানও পড়ে থাকতে দেবে না!

Read more


‘মাইন্ড রেপ!’ না, সামান্য বিচলন নেই লুব্ধকের আচরণে। মোনালিসার মুখে শব্দদুটো শুনে অত্যন্ত সহজেই গ্রহণ করল সে। অন্তত চোখ-মুখ, পেশির নড়াচড়া দেখে তাই মনে হল। অবাক হয় মোনালিসা। লুব্ধক ক্রমশ রহস্যময়। ঠিক এক ঘন্টা পঁয়ত্রিশ মিনিট আগে, শব্দজোড়া শুনে এত উদাসীন থাকতে পারেনি মোনালিসা।

Read more


সময়ের চক্রে সময় ফুরোলে কেমন অসময় জাঁকিয়ে বসে। এই ঈশ্বরীপুরের জমিদার বাড়ি দেখলেই তা বোঝা যায় কেলন। একসময় চৌধুরীরা ছিলেন ঈশ্বরীপুরের সর্বময় ঈশ্বর। আলো ঝলমল জমিদার বাড়ি, জাঁক-জমক, পুজো - পার্বণ, উৎসব - অনুষ্ঠান লেগেই থাকত। শুধু কি তাই! হাতিশালে হাতি, ঘোড়াশালে ঘোড়া, লোকলস্কর, লেঠেল...সব নিয়ে জমিদার বাড়ি একেবারে গমগম করত।কালের নিয়মে সব গেছে। শত শত বছরের স্মৃতি বুকে জরাজীর্ণ দেহে দাঁড়িয়ে রয়েছে শুধু জমিদার বাড়িটা।

Read more


সরনায়েকের বাড়ি থেকে বেরুতে বেরুতে কবিতা বলল," কুকুরটার এবার একটা কিছু করা উচিত"। রাস্তা উঁচু-নিচু, জায়গায় জায়গায় ইটের টুকরো, খোয়া নাক উঁচিয়ে আছে। ঠোক্কর খেলে নখ উড়ে যেতে পারে,মুখ থুবড়ে পড়ে যেতেও পারি। গত শনিবার পড়ে গেছিলাম প্রায়। কবিতাই আমায় ধরে ফেলে।

Read more


অনেক দিন পর এই মফস্বল শহরে আসতে হলো। এখানে স্থানের মাহাত্ম্য না থাকায় আর নামোল্লেখ করছি না। কর্মসূত্রে একসময় বেশ কিছুদিন এখানে থেকেছি। আগেও কর্মসূত্রেই এখানে আসতে হয়েছে। ফলে রাস্তাঘাট চেনা। তাই যখন আমাদের লোকাল ট্রেনটা অবরোধের নাগপাশ কাটিয়ে নির্ধারিত সময়ের প্রায় চারঘন্টা পরে প্রায় মাঝরাত করে পৌঁছল, তাতে বেশি বিচলিত হইনি।

Read more


দাঙ্গার সময়। চারিদিকে রক্তস্রোতে ভাসছে রাস্তাঘাট। হঠাত হঠাত জ্বলে উঠছে আগুনের লেলিহান শিখা, রইছে রক্তধারা নদীস্রোতের মত। মানুষ যেন রক্তপিপাসু ভ্যাম্পায়ার। ধর্মের নামে শুধু সে রক্ত চায়, নরবলি আর মানুষের কুরবানির হিড়িক চলেছে চারিদিকে। মৃত্যুর ধ্বংসলীলার তাণ্ডব চলছে সর্বত্র।

Read more


একজন বয়স্ক লোকের সঙ্গে কীভাবে কথা শুরু করা উচিত? শুধু তো বয়স্ক নয়, একেবারে একশ’ আট। একশ’ আট? না, এতে নাকি অবাক হওয়ার কিছু নেই, এই দ্বীপে একশ’র উপরে আরও অন্তত গোটা দুই-তিন— । আশি-নব্বই তাও অন্তত পাঁচ-সাত। আলাউদ্দীন ইলেকশান করা ছেলে। পঞ্চায়েত-বিধানসভা করে করে সবার বয়স, বাবার নাম, পাড়া— । তবে অমল ত্রিপাঠী একেবারে হায়েস্ট। আর একটা কথা, এই দ্বীপে সবাই কিন্তু মেদিনীপুরের। সেই তেতাল্লিশের মন্বন্তরে বা তার আগে-পরে মেদিনীপুর থেকে আসা।

Read more


'সেদিন আমাকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নিল, জানিস?' ফিসফিস করে কথাটা বলে উল্টোদিকে ঘুরে তাকাল অহনা। ঘরের অ্যালার্মের শব্দ। একধাক্কায় দরজা ঠেলে ঢুকল নিবিড়।চোখমুখ থমথমে। ভারী গলায় বলে, ' আচ্ছা, আই কন্ট্যাক্ট না-হলে তুমি কারও সঙ্গে কথা বলো কি? কামন! গসিপ ছেড়ে...' চেঁচিয়ে একটা ধমক দিল অহনা, ' কার সম্পর্কে কথা বলছি, কার সঙ্গে কথা বলছি না জেনেই একটা মন্তব্য করে দাও কেন?’

Read more


সকাল আটটা নাগাদ ফোন। ভোরবেলা কাগজ চলে আসে। সেদিনই অ্যাডটা বেরিয়েছে। ঠাণ্ডা স্বরে লোকটা বলল আপনাদের কত দিনের মধ্যে দরকার? সেদিন বেরোবে জানতাম। আমার তখনও দেখে ওঠা হয়নি। অবাক-ই হলাম। লোকটা আমার সংশয় বুঝল হয়ত। বলল আপনার নম্বরের শেষটা ডবল টু ডবল ফাইভ তো? আজকের কাগজে আপনারা ছোট একটা বিজ্ঞাপণ করেছেন।

Read more


ঝিকঝিক রোদ উঠেছে। গত রাতে গোটা বন জুড়ে বৃষ্টি নেমেছিল। বেশ ঠান্ডা লাগছিল। ননি বেশ কয়েকদিন হল সাজুর বনে এসেছে। সাজুর বনে এই তার প্রথম আসা। শহরে সে হাঁপিয়ে উঠেছিল। তার বন খুব টানে। বন জংগলের ভেতর দিয়ে তার এলোমেলো হাঁটতে ভালো লাগে। আজ সকালের রোদটা দেখে ওর মনটা ভালো হয়ে গেল। বন বাংলোর হাতায় একটি বড় শিমুল গাছ। গাছে এখন শিমুল ফুলের ঢল। লাল ফুলের বাহার যেন বনময় ছড়িয়ে গেছে।

Read more


সাগর দেখে, ঝোড়ো হাওয়া বইছে আর একঝাঁক বাবুই পাখি যাদবপুরের আকাশে চক্কর কেটে উড়ছে তো উড়ছে। কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে, কখনও এইট বি বাসস্ট্যাণ্ডের উপর, কখনও সুলেখার দিকে। হঠাৎ খেয়াল করে, পাখিগুলো আর নেই। পরক্ষণে দেখে, সেই পাখির ঝাঁক তাদের গ্রামের বাড়ির পিছনে ক’টা তালগাছের উপরে ঝোড়ো হাওয়ায় আগের মতোই চক্কর দিচ্ছে।

Read more


বাঁ হাতে নাইলনের ঝোলানো ব্যাগ।ব্যাগে সাতটা ছিটেকল, জলের বোতল, ঢাকনিতে সরু সরু গোটা কতক ছিদ্র করা মাঝারি সাইজের প্লাসটিকের কৌটো,বিড়ির প্যাকেট, দেশলাই,আর একখানা গামছা।ডান হাতটা ফাঁকা।মাথার ওপর শেষ ফাল্গুনের চড়বড়ে রোদ নিয়ে নন্দ চলেছে কামডোবের বিলে।নামে কামডোব হলেও আশপাশের গাঁ-গেরামের মানুষের মুখে তা ' কন্ডোবের বিল '।

Read more


'সাত আর পাঁচে মোট বারো। সেটাকে বারোয়ারী করে বারোভূতের হাতে তুলে না দিয়ে এখন থেকেই প্ল্যানমাফিক একটা সুন্দর বন্দোবস্ত করে ফেলা উচিৎ। কি বলো তোমরা?' মিথিলেশ চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে বলে। 'দ্যাখ ছোড়দাভাই তুই কিছু ভুল বলিস নি। কিন্তু বাকিরা কে কি ভাবছে যদি খোলসা করে বলে'.... মিতুন মন্তব্য করে।

Read more


আজকাল বেশি রাত অবধি জেগে থাকতে কষ্ট হয় সান্ত্বনার। কিন্তু উপায় নেই, ডোডোর সাথে এ দেশের টাইম জোনের ফারাক প্রায় পাঁচ ঘণ্টার। সে ইউনিভার্সিটির কাজ সেরে, লাইব্রেরিতে সময় কাটিয়ে, ডর্মে ফিরে যতক্ষণে মায়ের সাথে কথা বলার ফুরসৎ পায়, ততক্ষণ কোনো না কোনো উপায়ে জেগে থাকতেই হয় সান্ত্বনাকে।

Read more


(১) পাহাড়বেষ্টিত এক ঘন জঙ্গল,কোথাও কোথাও বন এতটাই গভীর যে দিনের বেলাতেও সূর্যের আলো প্রবেশ করে না। এই অরণ্যই হিড়িম্বার পৃথিবী। পাহাড়ের উল্টোদিকের দুনিয়াটা কুয়াশার মতই রহস্যময় ওর কাছে। বনের ঠিক মাঝে ওর কুঁড়েঘর। আশেপাশের বৃদ্ধ গাছেরা প্রহরীর মত পাহারা দেয় ওকে, মাঝে মাঝে ছোট্ট পাখির দল এসে গান শোনায় আর মিষ্টি মিষ্টি আবদার করে ওর কাছে! এই অরণ্যের মায়া-মায়া পরিবেশে মিশে আছে হিড়িম্বার মায়ের গন্ধ

Read more


প্রায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে চলতে জীবন কখন থমকে যায়, কখন সমস্ত গতি জট পাকিয়ে যায় সময়ের ছোট্ট কুঠুরিতে, কে-ই বা জানে সেটা ? এখন রাত সাড়ে নটা । উপরের ঘরের দেরাজ খুলে প্রায় রোজদিনের মতোই সে ফের বের করে এনেছে সেই বহুবার পড়া মলিন ডায়েরি । তার মায়ের ডায়েরি । ছোটো ছোটো মুক্তোর দানার মতো অক্ষরে মা লিখে রেখে গিয়েছিল নিজের কথা । লকডাউন চলছে । এইসময় থেকেই রাত-কার্ফু জারি হয় । চলে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত ।

Read more


দীপু সাইকেল টা উঠোনে রেখে যাবার পর অজিতেশ অনেকক্ষণ সাইকেলটাকে পরখ করছিল। সুচেতনা ভাইঝি কে পুকুরের বাঁক টা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে উঠোনে পা দিতেই অজিতেশ বলল, এই রংচটা ঝড়ঝড়ে সাইকেলটা নিয়ে কি করবে? সুচেতনা শুকনো মুখ করে সাইকেলটা দোর দিকে তুলে রাখতে রাখতে বলল, এখন আর উপায় কি? তাছাড়া কবে মোটর বাইক কিনবে তবে চাপব। সে ও তো পরের উপর ভরসা করে বসে থাকা। আমি তো মোটরবাইক চালাতে পারি না। তাই এখন এইটাই আমার পক্ষীরাজ বলতে পারো।

Read more


সকাল থেকেই গুমোট মেঘ কালো পিচের মতো চিটিয়ে রয়েছে আকাশে। ঘরের ভেতরকার চোখ হারানো অন্ধকার তখন‌ও সরে যায়নি ভালো করে। তার‌ই মাঝে কাজের থলিটা হাতে নিয়েই হাঁক পাড়ে বিমল মিস্ত্রি, "কুর্নিটা ব্যাগে নাই যে গো?"

Read more


আজ বেলা থাকতেই গাঁ থেকে ফিরল জানিফ। অন্যদিন বাড়ি ফিরতে ফিরতে বিকেল ডুবে যায়। আজ চোখ-মুখও কেমন চিন্তিত চিন্তিত। ধানের শুকনো নাড়ার মতো পানসে। জানিফ ধানের নাড়া কেনা-বেচার কারবার করলেও তার চোখ-মুখে অত ধকল দেখা যায় না যতটা আজ শুকনো হয়ে উঠেছে।

Read more


[এক] “কথাটা তাহলে সত্যি?” হারাধন মাইতি কাঁচুমাচু মুখে বলল, "আমাদেরই পাড়ার লোক স্যার। বুড়ি মানুষ। চোখে দ্যাখে না ভালো, তাই হয়তো বুঝতে পারেনি। আপনি একবারটি চলুন, আমি সব ম্যানেজ করে দিচ্ছি।” বিডিও উত্তেজিত গলায় বললেন, "কিন্তু বাক্সটা উনি পেলেন কোত্থেকে?"

Read more


মোরগ ডাকা শেষ হতে না হতেই আবি বুড়ি ব্যাগ গোছানো শুরু করে। ব্যাগ বলতে কাপড় কিনলে যে ব্যাগ পাওয়া যায়, সেই ব্যাগ। ফিতেতে সেফটিপিন লাগানো, রঙ ক্ষয় হয়ে যাওয়া। কোন কালে কারু কাছে পেয়েছিলো, আগলে দেখেছে। ব্যাগের মধ্যে কতকিছু। দুখান কাপড়, দুখান শায়া, ছেঁড়া ওড়না, ভাঙা আয়না, দাঁত ভাঙা চিরুনি, পানি খাওয়া গ্লাস, নারকেল তেলের ডিবা, পা ঘষা পাথর, প্লাস্টিকের ক্যারি ব্যাগে মোড়া ক্ষয়ে যাওয়া সাবান, একটা ঝুনো নারকেল, দুটো শশা, একটা আপেল, কেজি খানেক চাল, আর কৌটোর মধ্যে বহু যত্নে রাখা দুশো টাকা, তাতে দুটো পঞ্চাশ টাকার নোট আর দশ কুড়ি টাকার খুচরো।

Read more


শৈবালের সাথে বীথির আলাপ লোকাল ট্রেনে। চন্দননগর থেকে রোজ সকাল সাড়ে সাতটার বর্ধমান লোকালে চেপে ওরা হাওড়া স্টেশনে নামতো । বীথি উঠত লেডিস কামরায়। শৈবাল জেনারেলে। ট্রেন ধরতে এসে ওরা রোজ প্লাটফর্মের বেঞ্চিতে বসে অপেক্ষা করতো। তারপর ট্রেনের ঘোষনা হতে নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে দুজনে দাঁড়াতো। রোজ একইসময় স্টেশনে ঢোকার দরুণ ওরা প্রায় পাশাপাশি বসতে থাকল। দিনের পর দিন কাছাকাছি বা পাশাপাশি বসার ফলে দু’ একটা করে কথাবার্তা কবে থেকে যেন শুরু হয়ে গেছিল।

Read more


ঘরটা এমন কিছু বড় ছিল না। আবছা অন্ধকারের মধ্যে এমন কিছু দেখা যায় না। একটা ছোট্ট জানলা দিয়ে সামান্য আলো আসছে রাস্তার ল্যাম্প পোষ্ট থেকে। তা থেকে দেখা যাচ্ছে একটা চেয়ার আর টেবিল ছড়ানো। সামনের ফাঁকা মেঝেয় তখন শুকিয়ে যাওয়া কালচে দাগ।

Read more


এবার সহমনের গল্পে থাকলো, ফাল্গুনী দে'র চারটি অণুগল্প।

Read more


করিম যখন প্রথম প্রথম মতিলাল চৌধুরীর জমিতে লাঙল চষতে শুরু করে ,তখন আশেপাশের সরপুর, বেগমপুর, লালদীঘি ,পাঁচথুপি, খেজুরপট্টি এইসব গ্রামের চাষিরা আলের মাথায় দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে দেখত। এতো লাঙলচষা নয়, যেন চোখের নিমেষে ম্যাজিক দেখানো। দশ দিনের কাজ একদিনে করা। দুটো মোষের শক্তি যেন একটা মানুষের গায়ে। অমন কাজে দশাসই মোষেরাও ক্লান্ত হয়ে পড়ে, কিন্তু করিম যেমন শক্তিধর তেমনই ক্লান্তি বোধহয় ওকে কখনোই ছুঁতে পারে না।

Read more


ধানকাটা খেতের মতোই তার আজ মনের অবস্থা। পাতান আলি বেশ কদিন ধরে দেখছে তার চারপাশকে। কেমন যেন সব ছন্নছাড়া। আজকাল তার ভাবের ঘরে কবিতা আসছে না। সে পড়ালেখা জানেনা। অথচ তার মনে কতই না কথা আসে। সে ছন্দ মিলিয়ে শোনায় লোকজনকে। মীর সাহেবের ছোট ছেলে শীষ মহঃ বলে, 'ভাই , তোমার ওগুলো আমাকে শুনিও। আমি লিখে রাখব। তারপর তোমার একটা বই বের করব।'

Read more


১ আজ মনসা পূজা। রুম্পিদের দোতলা বাড়ির বারান্দা থেকে শ্রীশ্রীকালিমন্দিরের সাদাকালো টাইলস বসানো চওড়া উঠোন দেখা যায়। কদিন ধরেই মন্দিরে মন্দিরে মনসামঙ্গল, পদ্মপূরাণ পড়া চলছে। একটু পরেই রুম্পিদের কিছু আত্মীয়া এবং পাড়াপড়শি দুধ নিয়ে আসবে। পূজা সারা হলে মিনতি মাসীমাকে ডেকে সেই দুধের ভান্ডগুলো দিয়ে দেবে তারা। যুগ যুগ ধরে এ প্রথাই চলে আসছে এ অঞ্চলে। প্রথাটা বেদাত বা শিরক্‌ কিনা, এই কূট প্রশ্নে সাধারণ মুসলমানরা আগে কখনো সময় নষ্ট করেনি। যার ইচ্ছা হয়েছে সে যুগ যুগান্তরের প্রথাটা মেনে চলেছে। আর না মানলে নাইবা মানলো। এ নিয়ে এতদিন কেউ কোন কথা তোলেনি বা বলেনি।

Read more


এক আলো ঝলমল সকালে রামপূজন তার ঘরের দাওয়ায় দড়ির খাটিয়ায় শুয়ে অপলক তাকিয়েছিল তার বউ মোহলীর দিকে। তখন গৃহস্থালী কাজে ব্যস্ত মোহলীর পোশাক কিছুটা অবিন্যস্ত। অনাবৃত কোমর তলপেট, উন্নত বুক এবং ভারি নিতম্বের স্পষ্ট প্রকাশ ইত্যাদি সমেত, রামপূজনের চোখে মোহলীকে অন্যরকম দেখতে লাগল। যেন আজই প্রথম মোহলীকে এমনটা দেখছে সে। আর তাই সেই মুহূর্তে মোহলীকে নিজের দুহাতের বেড়ের মধ্যে জাপটে ধরে যা খুশি তাই করার জন্য রামপূজনের শরীরের মধ্যে রীতিমত তোলপাড় শুরু হলো।

Read more


-- এই সোফিয়া, তোমার নামের অর্থ কী গো? আকাশ কৌতুকের সঙ্গে বলে। মুখে আলতো মিষ্টি হাসির রেখা তিনি সোফিয়ার উত্তর-- -- গ্রিক ভাষায় সোফিয়ার অর্থ, জ্ঞান বা প্রজ্ঞা। -- সে কী! তুমি গ্রিক ভাষার অর্থ ও জানো? এই ভাষাটাও বুঝি জানা আছে? -- না ঠিক তা নয়, তবে আমার নামের অর্থটা জানি।

Read more


পলাশ শিমুলের সাথে রক্ত কেনো মিশে যায়! সে রঙ বসন্তের গানে ফিরে আসে। দেশে দেশে দুর্বলদের রক্ত নিঃশব্দে পলাশে শিমুলে লুকিয়ে থাকে। এই সব কথাই বলে যাচ্ছেন কালকেতুকে এক বিবেকবান মানুষ। যার নাম প্রাণতোষ। কথা গুলো ভালো লাগছিলো না কালকেতুর। কয়েকদিন হলো কালকেতু এসেছে এই বঙ্গে। দলিত হলেও তাকে আজ কাল দলের লোকেরা খুব মান্যতা দিয়েছে। তার হাতেই জমা হয়েছে রামনবমীর মিছিলের অস্ত্ররাশি। দলিত, আদিবাসীদের মনে জাগিয়ে তুলতে হবে দেশপ্রেম। বিষিয়ে দিতে হবে তাদের মনকে মুসলমানদের প্রতি ঘৃণায়। সে পথেই হাঁটছে কালকেতু।

Read more


গোসাবার হজরত আমাকে মৈপীঠের কথা বলল। বলল, ‘আমাদের এদিকে সব চব্বিশ পরগনার, কিছু বড়জোর দেশভাগের সময় যশোর-খুলনা থেকে আসা। মেদিনীপুরের লোক পাবেন আপনি পশ্চিমে। পশ্চিম মানে কুলতলি থেকে শুরু করে একেবারে কে-প্লট, এল-প্লট হয়ে সেই সাগরদ্বীপ পর্যন্ত। আর মেদিনীপুরেই তো সাংঘাতিক সেই ঝড়। ঝড়, নদী-গাঙের ঢেউ। একেবারে ত্রিশ-চল্লিশ হাতের উঁচু। একদিনেই হাজার হাজার লোক— ।’ বলতে গেলাম, ‘আমি তো দুর্ভিক্ষের লোকগুলির— ।’ মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে ও জানাল, তারপরেই শুরু সেই দুর্ভিক্ষের।

Read more


টাকা আসছিল। আসছিল মানে দিচ্ছিল কেউ। রুমির মা ২ টাকা, শান্তির পিসি ১ টাকা, পলুর মাসি ৫ টাকা। শিওরতনের বাবা একদিন ১০ টাকাই দিল। এইরকম। সন্তুর ঠাকুমা কিছু দেয় না। চুপ করে বসে থাকে আর অতসীর মুখের দিকে চেয়ে থাকে, যেন কিছু লক্ষ করে, যেন কিছু জরিপ করতে চায়। শুধু টাকাই না। শুভ্রা একদিন পেয়ারা এনে দিল, বলল, গাছপাকা। আপ্পা একদিন কাচকলা এনে দিল, বলল, আমরা কেউ কাচকলা খাই না। দেখাদেখি একদিন কমলালেবু এনে দিল বেণী, বলল, তার ভাই নাসিক থেকে এনেছে। তবে অবাক করে দিল পুন্যির মা, সে আনল আলু বেগুন আর আলোচাল।

Read more


পদ্মাপাড়ের একটা জীর্ণ কুটির। আঙিনার উদোম হেঁসেলে বসে আটা মেখে রুটি সেঁকছে বিশ বছর বয়সী কাবিরা। এপাশ ওপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ছেঁড়াফাটা মাছধরা জাল। হঠাৎ বোন শাবিরা হন্তদন্ত হয়ে বাইরে থেকে এসে প্রথমেই তার কাছে গেল। চুপিচুপি জিজ্ঞেস করল, বুবু- মা কোথায়? কাবিরা বলল, ঘরে শুয়ে আছেন। হয়তো ঘুমোচ্ছেন । আল্লা যেন তাঁকে শান্তিতে রাখেন। বলতে বলতে কাবিরা দেখল, শাবিরা তার আঁচলের আড়াল থেকে পলিথিন-মোড়া একটা পুঁটলি বের করছে। কাবিরা রুটি সেঁকতে সেঁকতে জিজ্ঞেস করল, কী ওটা- কিসের পুঁটলি?

Read more


শরৎ পেরিয়ে হেমন্ত শেষ লগ্নে দাঁড়িয়ে। আজ সতেরোই অগ্রহায়ণ। ঠাণ্ডা বেশ জাঁকিয়ে বসেছে।এবার শীতে না বড়ো ভোগান্তি হয়। দিন ছোটো, রাত শেষ হতে চায় না।

Read more


আর সাত মিনিট আটান্ন সেকেন্ডের মাথায় আরও পাঁচশো পয়সা জমা হবে অন্তরার ওয়ালেটে। পয়সা শব্দটা যদিও ঊহ্য থাকে কাক্কুতে। অ্যাপের পরিভাষায় শব্দটা কয়েন। সেই হিসেবে আর সাত মিনিট ছাপ্পান্ন সেকেন্ডের মাথায় আরও পাঁচশো কয়েন জমা হবে তার ওয়ালেটে। যার দরুণ প্রায় বারো মিনিট চোখ রাখা যায়নি হোয়াটসঅ্যাপে। খোলা হয়নি ফেসবুক। পাঁচ মিনিট পরপর আঙুল ছুঁইয়ে জ্যান্ত রাখতে হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড স্ক্রিনকে। অপেক্ষা ঠিক আর সাত মিনিট চুয়ান্ন সেকেন্ডের।

Read more


স্টেশনে ঢুকতেই, গেরুয়া পোশাক পরা একটা লোক সায়নের হাতে লিফলেটটা ধরিয়ে দিল।কোথায় যেন হরিনাম সংকীর্তন হবে । তারই লিফলেট।মুচকি হেসে নীলির দিকে তাকিয়ে সায়ন জিগ্যেস করল, “আমাকে কি খুব বুড়ো বুড়ো দেখাচ্ছে?” আঁড় চোখে সায়নের দিকে তাকিয়ে নীলি হেসে উত্তর দিল, না না,এক্কেবারে কচি খোকা দেখাচ্ছে। ট্রেনটা বেশ ফাঁকা । জানলার দুপাশে ওরা দুজন মুখোমুখি বসলো। হাতে ধরা লিফলেটটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিল সায়ন।বেশ কালারফুল।বড় বড় করে তাতে লেখা আছে এ জন্ম ও পরজন্মের পাপক্ষয়।মৃত্যুর পর স্বর্গে স্থান।

Read more


হাওয়া যেদিকে থেকে বয়, সেদিকে পিঠ করে গেটের মাঝ বরাবর লোহার খুঁটি ধরে দাঁড়ায় ঝিল্লি। সক্কালবেলার ক্যানিংমুখী লোকাল বিলকুল ফাঁকা। দরজায় বসা মেছুনিরা ঠোঁট বাঁকায়, গা টেপাটেপি করে তাকে দেখে। ঝিল্লি পাত্তা দেয় না। ব্লাউজের ফাঁক গলে পিঠ বেয়ে ঝিরঝির বাতাস ঢোকে, মাইরি! কখনও এমন ঝামড়ে পড়ে হাওয়া যে, চুলগুলো সামনে উড়ে এসে মুখ ঢেকে দেয়। বড় মেছুনি কয়, 'চুল বেঁধে নে না মাগী।'

Read more


১ সিঁড়ি দিয়ে উঠে ডান দিকে ফ্যামিলি রুম।সুপার বোল পার্টিটা ফ্ল্যামিলি রুমে আয়োজন করেছে এলিনা।আজ নীলের অতিথিই বেশি।হর্ষ,নিখীল, প্রবীর,শেখর। মেয়ে প্রথার চারজন বন্ধু দোতলায়।প্রথা নিজের ঘরে ল্যাপটপ আর স্পিকার অন করে খেলা দেখছে।মাঝেমধ্যেই দোতলার ঘর আর ফ্যামিলি রুম থেকে তারস্বরে ' টাচডাউন...' চিৎকার ভেসে আসছে এলিনার কানে।

Read more


জুলাইয়ের মাঝামাঝি। ক'দিন ধরে থেকে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এক পশলা বৃষ্টির পরই রোদ। সেই সঙ্গে ভ্যাপসা গরম। এক এক সময় আকাশ মেঘে ঢেকে গুমোট হয়ে থাকছে। পলাশডাঙা ছোট একটা আদিবাসী গ্রাম। চারপাশে বিস্তৃত চাষজমির মাঝে মাঝে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে এক একটা জনবসতি। সেই সব গ্রামে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করে। গত ত্রিশ চল্লিশ বছরে গ্রামগুলোর জীবনধারায় বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। গ্রামীণ সড়ক যোজনায় প্রায় প্রতি গ্রামে রাস্তা হয়ে শহরের সঙ্গে জুড়ে গেছে।

Read more


যে কুচিন্তা মাথায় পুরে রাস্তাভর জোরে ঘাই খেতে খেতে হাঁটছিল, তাই হল। এখন সারারাত মাথায় হাত চেপে নোনা গাঙের হাওয়া গিলে সটান রাস্তায় পড়ে থাকা। আর রাতভর রায়মঙ্গলের ঢেউ গুনে রাত জেগে পাঁড় মাতাল সাজা। কোথায় আর যাবে! এখানে চেনা পরিচিতও কেউ নেই। সেই পাটঘেরায়, ছোটো মাসিমার বাড়ি ছাড়া!

Read more


টেবিলে খেতে বসার পরে মনে পড়ল জল নেই। এই হয়। জরুরি কথা মনে থাকে না। দুপুরেই জল ফুরিয়ে গিয়েছিল। তখন ভেবেছিলাম বিকেলের মধ্যে ভরে ফেলব। বিকেল গড়িয়ে সন্ধে হয়েছে কখন। রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের পাশে ঝিম ধরা পোকার ঝাঁক। ওরা উড়ে উড়ে কী যেন পাহারা দেয়। আলোর চারপাশে ওদের ভিড়। দল বেঁধে থাকে। দল বেঁধে মরে যায়। তবু ওরা দলেই বাঁচে। দমবন্ধ হয়ে মরে যাওয়ার জন্য হাজার কারণ এখন ছড়িয়েছিটিয়ে।

Read more


প্লাটফর্ম থেকে বাইরে এসেই একটু থমকে গেল আহেলী। স্টেশন রোডকে অন্ধকার পুরো গ্ৰাস করে রেখেছে। জল আর অন্ধকার ভেঙে ভেঙে কোনরকমে মেইন রোডে পৌঁছালো। লোকজন প্রায় নেই বললেই চলে। অটো স্ট‍্যান্ডও শুনশান। রাত দশটায় লাস্ট অটো।এখন তো ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছুঁই ছুঁই।তার উপর সকাল থেকে নিম্মচাপের বৃষ্টি। দুপুরের পর থেকে ঝোড়ো হাওয়ার ঝাপটা উথাল পাথাল করে দিচ্ছিল চতুর্দিক।

Read more


দুখিরাম মূর্মু হাটে যাচ্ছে। কোথাকার হাটে? না জোড়া পাহাড়ির হাটে। কোথায় জোড়া পাহাড়ি? সে অনেক… দূর! প্রথমে পেরোতে হবে নদী, নদীর পর মাঠ, মাঠের পর জঙ্গল, জঙ্গল পেরিয়ে সেই যে যমজ পাহাড় দুটো পাশাপাশি দাঁড়িয়ে,যেখান থেকে রোজ সূর্য উঠে,সেই পাহাড়তলীর নিচে। পাহাড় তো নয়,ওগুলো হল টিলা। দেবতারা ওই বড় বড় পাথরদুটো নিয়ে লোফালুফি খেলত,ভুল করে ওই জঙ্গলে পড়ে গেছে,আর তুলে নিয়ে যায়নি। তারপর ম্যাগ ডাকলেক, বৃষ্টি হলেক, পাখিতে বীজ ফেললেক, গাছপালা-বৃক্ষ জন্মালেক। উয়াদের কী পাহাড় বলা যায় গো! যায় না,যায় না। পাহাড় তো অনেক উঁচু! দুখিরামের দাদু কথাগুলো বলেছিল।

Read more


কে যেন বিলে ডিঙিতে চেপে টলটলে জল থেকে শাপলা তুলছে। আবির বিলের পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। কিন্তু ভোরের কুয়াশা মাখা বিলে তেমন নজর যাচ্ছে না। তবু আবির দেখবার চেষ্টা করছে। চারপাশে পুজো পুজো গন্ধ। ছাতিয়ার বিলে জল বাঁধ ছাপিয়ে যাবে যেন। কতদিন পর তার আসা। আবির পুজোর সময় আসতে পারে না তার গ্রামে। শহরে তার বহু দিনের ব্যবসা । তার একটিই ছেলে। বাইরে থাকে। তার বউ ইরা সঙ্গে এসেছে। পুরনো বাড়িটা তেমনই আছে। ওর কাকার ছেলে অমিত দেখা শোনা করে।

Read more


তারও অনেক পরে দু’জন হাড়-হাভাতে মানুষ যখন শেয়ালটাকে কাদাসমেত তুলে আনল ডাঙায় তখন আর তাকে শেয়াল বলে চেনা গেল না। তখন সবার মনে দুঃখ হল। দুঃখ হল অনর্থক একটা প্রাণের অপচয় দেখে। এমন নয় যে এই শেয়ালটাই একমাত্র পৃথিবীর সব অনিষ্ট করে বেড়াচ্ছিল। এর মৃত্যুর পর আর কোনো অনিষ্ট হবে না কারো। সবই তো যেমনকার তেমনই চলবে।

Read more


বুঝতে পারছি না কীভাবে শুরু করব। এই দুঃসময়ে গল্প বলা খুবই কঠিন। এমনকি, মাধবের গল্পও-- মাধবের বেশ কিছু গল্প আপনারা জানেন। এটা ঠিক যে, মাধব নরম মনের মানুষ। ঘর-সংসার না করা, গড়পরতা মানুষের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। সবার ভালো হোক-- এই শুভকামনা সে সাধ্যমতো তার কাজকর্মের মধ্যে ফলাতে চায়, ফলিয়েছে-- তাও আপনারা জেনেছেন। অদ্ভূত একটা ব্যাপার কী জানেন, সে অন্যের যন্ত্রণাকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে।

Read more


(১) স্টেশনের ওভারব্রিজে ডাঁই হয়ে পড়ে থাকা একতাল কুয়াশার মাঝে একমুখ বিরক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছে সফিক। আজ কুয়াশাও পড়েছে তেমনি, চোখের পাতা ভিজে যায়। যেন স্বর্গে যত পাগলি বুড়ি আছে তারা সবাই তাদের ধূসর মলিন সাদা কাপড়গুলোকে একসাথে পৃথিবীর ছাদে মেলে দিয়েছে।

Read more


ছেড়ে আসা খোলসে সাপ আর ঢোকে না। ঢুকতে পারে না। সেই সব খোলস , শরীরের মাপের সঙ্গে আর মেলে না, গভীর ক্ষতচিহ্ন ও তাতে লেগে থাকে কখনও। স্নান সেরে পাঞ্জাবি গলাতে গিয়ে মনে হ'ল। পাটেপাটে ইস্ত্রি করা সাদা পাঞ্জাবিতে সব ক'টা বোতামই লাগানো ছিল; তিনটে বোতাম খুলে মাথা গলাতেই কাঁধের দিকটা টাইট লাগল- টেনে টুনে বুক অবধি যাও বা গেল , পেটের দিকে নামতে গিয়ে পাঁজরে আটকালো।

Read more


নদীর ধারে যেখানে এসে বাইক দাঁড়াল তার ওপাশেই পাহাড়। ডাইনে বাঁয়ে যত দূর চোখ যায় সেই পাহাড়ের সারি। নদী তেমন চওড়া নয়, তবে নদীখাত অনেকটাই বড়। পুরোটাই নুড়ি আর পাথরে ভরাট। মাঝখানে হাত দশেকের জায়গায় এক নাগাড়ে বয়ে যাচ্ছে পাহাড়ি জলের ধারা। নদী। ওপারের পাহাড় ঘন সবুজ।

Read more


চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী প্রতিমা বিসর্জনের ছবি তুলতে চলে গিয়েছিলাম দুপুর দুপুর। মূল প্রসেশন শুরু হতে রাত হবে। এখন চলছে তারই প্রস্তুতি। সকালের দিকে বাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জন। তারপর যারা লাইটিং ছাড়া বিসর্জন করছে তারা নিরঞ্জন করবে। আমি দুপুরে গেছি কারণ দুপুর বিকেলের ছবিগুলো অধিকাংশ ফটোগ্রাফার তোলেনা। জানেও না তখন হয়। তারা রাতের বেলা ভিড়ভাড় আর লাইটিং সহ নিরঞ্জনের ছবি টার্গেট করে। কিন্তু গঙ্গা ধারের রাস্তায় দিনের আলোয় লাইন দিয়ে প্রতিমার মিছিলের যে ছবি তার মজাই আলাদা। আসলে আমি ডে লাইটে ছবি তোলা পছন্দ করি। এর কোনো বিকল্প নেই। আর আনুষঙ্গিক অনেক সাবজেক্ট যেগুলো আলো থাকতে থাকতে তুলে না নিলে সমস্যা। যেমন দুপাশের ভিড় করা দর্শনার্থী, ভাসানের নাচ, হকার প্রভৃতি।

Read more


বিষাদগ্রস্ত হরিমেলার মাঠটা ভাবেনি, হরিমেলা ভাঙার সাতদিনের মাথায় আবার এত মানুষের সমাগম হবে মাঠে। সে তার বিষাদ ভেঙে চোখ মেলে দেখে অনেক লোক। কিছুদিন আগেই মেলা ভেঙেছে। মেলার দোকানের ছাই, আধ পোড়া কাঠ, জলের বোতল, এঁটো বাসি খাবারের কাগজ ঠোঙা, ছেঁড়া চিপসের প্যাকেট এখনও উড়ে বেড়াচ্ছে মাঠময়। মেলা চলার সময় কেউ খেয়াল রাখে না, মেলা ভেঙে গেলে ফেলে যাওয়ার পর কতখানি বিষাদ মাঠের বুক ভারী করে রাখে।

Read more


ক-২ তারপর সবার ঘর থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যেতে থাকল আয়না। নিজেকে নিজেই দেখা যায়। প্রতিবিম্ব। আলো ঝলকায়। কেউ কেউ সেটা দেখেই আবেগবিহ্বল। কেউ সহ্য করতেই পারত না। কিন্তু, সক্কলের বাড়িতেই থাকত। প্রত্যেকে ওটার সামনে দাঁড়িয়ে আরও ভাল, আরও নৈতিক, আরও বিনয়ী, আরও পরমনোলোভা হওয়ার অভিনয় করত। যার অভিনয় সবচেয়ে ভাল হত, সে হরষেবিষাদের সুন্দর বাড়িগুলোয় থাকতে পারত। কেউ কেউ লুকিয়ে রাখত, কিন্তু দেখত ঠিকই।

Read more


হাতে কাগজ। সকালবেলা, চায়ে চুমুক দেব, হাঁফাতে হাঁফাতে বুলান এল। গ্রিলের ফাঁকে দেখা যায় বুলানকে। মনে হয় কিছু খবর আছে। দরজা খুলতেই দুধের প্যাকেট দিয়ে বুলান সাইকেলের প্যাডেলে পা তুলেছে। খুব ব্যাস্ত। কী রে বুলান, এত ছটফট করছিস কেন? তুমি কিছু জান না? কী জানব? এই পাড়ার শেষে ঠিক বিনোদতলার মোড়েই তো একটা লাশ…। লাশ?

Read more


 রাতের কালচে নীল আলোয় রোহিত দেখে টিনার ঘুমন্ত মুখটা, কী নিষ্পাপ কোমল মুখ। পাশ থেকে মাথার বালিশ টেনে জোরে টিনার মুখের উপর চেপে ধরে, টিনা অনেকক্ষণ ধরে ছটফট করতে করতে একেবারে শান্ত হয়ে যায়। অথচ ঘন্টাখানেক আগেও দুজন শরীরী খেলায় মেতে উঠেছিলো। দুরন্ত আদরে ভাসিয়ে দিয়েছিলো টিনাকে।  

Read more


ভট্টাচার্য বাড়িতে এক যুগ পরে উৎসব --- অরিন্দম ভট্টাচার্যের বিয়ে। শেষ খাওয়াদাওয়া হৈ হুল্লোড় হয়েছিল অক্ষয় ভট্টাচার্যের ছোট বোন খুশির বিয়েতে। এই প্রজন্মে অরিন্দমই একমাত্র ছেলে। তার বিয়ের জাঁকজমকও তেমন হওয়া চাই তো, তাই অক্ষয়বাবু উদয়াস্ত পরিশ্রম করছেন। একা হাতেই সব করতে হচ্ছে। ভাইরা সকলেই দূরে দূরে, এসে পৌঁছাবে ঠিক বিয়ের আগের দিন।

Read more


গোলপার্ক ‘মৌচাকের’ সামনে যখন নামলাম, রোদ্দুর প্রায় নিভে এসেছে। আশেপাশের বাড়িগুলো, দোকানপাট, বিশেষত ফুলের দোকান, এক অদ্ভুত তামাটে অন্ধকার চাদরে মোড়া। মন বিষণ্ণ থাকলে আলোর অভাব চোখে পড়ে। সেন্টার থেকে বেরোনোর আগের মুহূর্তগুলো যতোবার মনে পড়ছিল, অক্ষম রাগ গুলিয়ে উঠছিল পেটের ভিতর। এরকম সময়ে যতোটা সম্ভব বাতাস টেনে নিতে হয় মগজে, শরীর হালকা করে দিতে হয়। আমিও সেটাই চেষ্টা করছিলাম। লোকটা অবশ্য হাত ধরেছিল, আর এগোয়নি। ওর অদৃশ্য আঙুল আমার বুকের আশপাশের শূন্যতায় কিছু খুঁজছিল। টের পেয়েছি আমি। মেয়েরা টের পায়।

Read more


জন্মভূমির টানেই গ্রাম ছেড়ে একেবারেই যায়নি তবে আত্মীয়দের থেকে দূরে লুকিয়ে থাকে মেয়েটি-এ খবর জানতাম এবং ভাবতাম এমন এক মেয়ে তার একলা জীবনে এতো সমাজের এতো ‘গুণগুণা-না’ কি করে সহ্য করে! গ্রামের বাসিন্দারা কেউই তার গলার আওয়াজ পছন্দ করে না-এটাও জানতাম। ইচ্ছা করতো মেয়েটির স্যাঁতস্যাঁতে মাটির বারান্দার এক কোণে চুপ করে বসে থাকি। সারাদিন তার গতিবিধি দেখি। আমার প্রত্যাশার অভিপ্রায় একদিন বলেই ফেললাম। আপনার বাড়িতে একদিন যেতে চাই- আপনি কি আমাকে--?

Read more


সুর করে লক্ষ্মীর পাঁচালি পড়তে পড়তেই অযাচিত শব্দ কানে আসে ঊষারানির, যে-শব্দের উৎস নিয়ে তিনি নিশ্চিত নন, যেন দূরের কোনও মন্দির থেকে ভেসে আসছে ঘণ্টাধ্বনি। হয়ত-বা পূজায় বা পাঁচালির সুরে তিনি এমনই বিভোর যে ঘন্টাধ্বনি ছাড়া অন্য কোনও শব্দের কথা মাথাতেই আসে না। সেই শব্দ বা শব্দের অনুরণন পাঁচালির সুরকে অতিক্রম করবেই এত নাছোড়, যদিও সেই শব্দ আপাতত তাঁর বিচলনের কারণ হতে পারে না, ফলত ঊষারানি পাঁচালি থামান না, অবিকৃত রাখেন সুরও, কেবল সেই সুরের মধ্যে, পাঁচালির মধ্যে ঢুকে পড়ে সেই ধ্বনি।

Read more


পাঁচদিন কাটল। ঠিক পাঁচদিন নয়, আজ এই দুপুর অবধি সাড়ে চার। বাড়ি ফিরে গেলে পুরো পাঁচ দিন হবে। চারপাশে বড় হট্টগোল। সবাই যে খুব চেঁচামেচি করে, তা’ নয়। সবাই উদ্বিগ্ন। অসম্ভব চাপা টেনশন সকলের চোখেমুখে। কেউ এখানে হা হা করে হাসে না, প্রাণ খুলে আড্ডা মারে না, ফোনে হই হই করে কথা বলে না, গান শোনে না, এমনকি মোবাইলে কোনও ছবিছাবাও দেখে না। পার্বতী অন্তত তেমনটিই লক্ষ্য করেছে এই ক’দিনে। সবাই বিপর্যস্ত হয়ে দৌড়য়। নানান জিনিসের জন্য ছুটোছুটি করে। বিরাট লাইন, বহু জিজ্ঞাসা। কত টানাপোড়েন।

Read more


ধিকালা রেঞ্জের ধনগড়ি গেট দিয়ে ববি চাঁদ সর্ফদুলির দিকে যাচ্ছিল। সে সময় তাকে ধরে ফেলে। ববি চাঁদের মটোর সাইকেল উল্টে যায়। ববি চাঁদ আট হাজার মাইনে পায়। তার ফুসফুস ফেঁড়ে গিয়েছিল। দুটো হাত দিয়ে সে নিজেকে আর তার পরিবারকে বাঁচায়। সাহেব বা সাহাবরা তাকে দিল্লীর এ্যাপোলোতে নিয়ে গিয়ে ফুসফুস ঠিক করে। কোনমতে পালিয়ে সে একটা জিপসিতে ওঠে যা ঠিক পেছু পেছু আসায় ববি বেঁচে যায়। তিনবার জিপসিকে আক্রমণ করে মানে ধরতে যায়। নেহাতই যন্ত্র হওয়ায় জিপসির কিছু হয় না ও সে ববি চাঁদকে বাঁচায়।

Read more


চাদ্দিকে চোর চোর রব উঠলেও সোনাদার দিকে কেউ আঙুল তুলতে পারে না। প্রথমবার জিততে পারেনি, তবে পরের বার প্রতিপক্ষের উজ্জ্বল অধিকারীকে বিপুল মার্জিনে পরাস্ত করে এমেলে হয়েছে। সোনাদার দিকে আঙুল তোলা অসম্ভব। মাটির বাড়ি, খড়ের চালা, তক্তপোষ, সবচেয়ে কাছের টিউবকলটাও সদরদুয়ার থেকে পঁচিশ গজের তফাতে। কয়েক বিঘে জমি আছে, চাষবাস আছে, গরু-বাছুর, তাছাড়া ওই হাঁস-মুরগি। মেয়েটা বিয়ের পর জামাইএর সঙ্গে বনিবনা হয়নি ফিরে এসেছে, পেটে বাচ্চা নিয়ে। একটাই ছেলে। বিএসসি পাস করেছে। কাঠবেকার, চাষবাসেও ঘোর অনীহা তার।

Read more


যেন হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে সব কটা দেওয়াল। জানালার কাচ, সিঁড়ি। টিভির শাহরুক কিংবা কাজল পর্দা ছেড়ে ছিটকে বেরিয়ে যেন উড়তে শুরু করবে হাওয়ায়। যেন ভেঙে পড়বে যাবতীয় মেঝে, ছড়িয়ে পড়বে সিমেন্ট, বালি এমনকী অ্যাকোয়ারিয়ামের জলও। লাল নীল মাছগুলি ডানা মেলবে আকাশে। যেন ভেঙে টুকরো টুকরো হবে সেও।

Read more


কান্টু রাতে ঘুমায় না। কান্টুর নাকি রাতে ঘুম আসে না! কান্টু সারারাত রাস্তা রাস্তা কান্টা কান্টা পাগলের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। কান্টু রাতের আঁধারে যার তার বাড়ির শোবার ঘরের দরজাজানালায় উঁকি মারছে। কান্টুর জন্য গাঁ-ঘরে কেউ ঘরের দরজাজানালা খুলে রাখতে পারছে না। কান্টু হয়ত পাগল হয়ে গেছে! কিংবা তাকে জ্বিনে পেয়েছে!

Read more


১ প্রতিদিনের মত পার্ক সার্কাস সিগন্যালে আমার গাড়িটা দাঁড়াতেই জানলাতে পরিচিত দুটো টোকা পড়লো। কাচটা অর্ধেক নামাতেই পুঁটির অভ্যস্ত হাসি। আজ একটা ডিপ সবুজ শাড়ি পরেছে ও, সঙ্গে রঙচঙে ব্লাউজ, বেমানান লিপস্টিক, চড়া মেকআপ। আমাদের সাড়ে তিন বছরের আলাপ বলতে কয়েক সেকেন্ডের এই দৃষ্টি বিনিময়, এটুকুই। রোজকার মতই দশ টাকা দিলাম পুঁটিকে, তারপরই সিগন্যাল গ্রীন, মিনিট পনেরোর মধ্যে কলেজ।

Read more


হুলুস্থুল তখন রাস্তা থেকে দরজায় ঠকঠক করছে। ফিসফিস ফুসুরফুসুর। অতকিছু কান করেনি মিরাজ। বাপ তাবারকও নিষেধ করেনি। এ মফসসল শহরে পিড়ির পিড়ি জন্মে বেঁচেবর্তে খেয়ে-পরে আবার মরে ভূত হয়ে গেল, সেই শহরকে কেন সে নিজের থেকে লুকিয়ে নেবে? পড়শি তো আপনই। পড়শির ইট-কাঠ-পাথরও আপন। এত বড় জীবনে দুটো তো কাল। ইহকাল আর পরকাল। সেই ইহকালে পেটের ভাত জোগাচ্ছে যে শহর সে শহর কি কখনও দুশমন হয়?

Read more


ভারতের রাজধানী, নতুন দিল্লী। এখানেরই একটি পাঁচ-ছ'তলা বিল্ডিং। পুরো এলাকায় এরকম প্রচুর বিল্ডিং আছে। তো.....রাস্তার ধারে এটি। রাস্তার ওপাশে একটি বিরাট টেন্ট হাউস। প্রায়ই অনুষ্ঠান হয়। যখন হয় না তখন এটি পাড়ার খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তা..... এই বিল্ডিং-এর নীচের তলায় ওরা থাকে।

Read more


নগ্ন বুকের উপর থেকে মাসুদ চানুর হাতটা নামিয়ে রাখে শারমিন। অদ্ভুত আলোছায়ায় অপূর্ব লাগছে রুমটি। যেন বেহেশ্‌তের মতো ! নূর ছড়ানো জ্যোতিচ্ছটা অলৌকিক রঙ ছড়াচ্ছে। এ যেন এক নূরমহল, কোনো হোটেল নয়।

Read more


মাঠের মধ্যে একটা ছোট স্টেশন। সেখানে একটা ট্রেন বহুক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে। কীসের দাবিতে কোথায় অবরোধ চলছে, তার জের। স্টেশনের মাইকে সেকথা ঘোষণা করা হচ্ছে বার বার। আবার কখন ট্রেণ চলাচল শুরু হবে, কেউ জানে না। সবাই অপেক্ষা করছে।

Read more


পড়ার টেবিলের দিকে তাকালেই বুকটা কেঁপে ওঠে লিপিকার। টেবিলে খাতার পাহাড় জমে আছে। কিছুদিনের মধ্যেই প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডাম মীরাদি তাড়া দিলেন বলে। ঘড়ির কাঁটা বলছে নটা, আর কুড়ি মিনিটের মধ্যে স্নানে যেতেই হবে। কয়েকটা খাতা ঝটপট দেখে নিতে পারলেই ভালো হয়। হঠাৎ বেজে উঠলো ফোন।

Read more


ঘুম ভাঙ্গার পর থেকেই আমার কিছু মনে পরছেনা। হটাত ঘুমটা ভেঙে গেল।কিন্তু আমি উঠতে পারলামনা। মানে উঠতে চাইলামনা। হাট পা কিছুই নাড়াতে ইচ্ছে করল না। প্রথমেই মনে হল আমি এখন কি করব। ঘরটার জানালা,দরজা আটা,মোটা ভারি পর্দায় মোড়া,বন্ধ এসির ঠান্ডা আমেজ। এখন দিন না রাত সেটা বুঝতে বেশিক্ষণ লাগল না অবশ্য। কিন্তু এখন সকাল না দুপুর মনে করতে পারলাম না। আজ কি রোববার? ঠিক মনে পরছেনা।

Read more


ফোনটা অনেকক্ষন ধরে রিং হচ্ছে। বাথরুম থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এসে ফোনটা ধরল শ্রেয়সী। এত সকালে কে ফোন করল ? ভোরবেলা ফোন এলেই বুকের ভেতরটা ধক্ করে ওঠে। সোহমের মার্চেন্ট নেভীতে চাকরীর জন্য শ্রেয়সীকে সবসময় টেনশনে থাকতে হয়। বছরে ছ’মাস তো জলে জলেই কাটায় মানুষটা। সংসারের সব দায় দায়িত্ব শ্রেয়সীর ঘাড়ে। ‘হ্যালো…।’

Read more


স্বামী কেন আসামী । অসাধারণ পালা । সুযোগ জীবনে একবারই আসে । এখনও যারা টিক্যাট কাটেন নাই তাড়াতাড়ি আসেন ।আগামী চৌঠা মাঘ । রাত্রি দশ ঘটিকায় । কলীবাড়ির মাঠে । শীঘ্র শীঘ্র আসেন । মঞ্জুরী অপেরার নবতম যাত্রাপালা । কলকাতার সাড়া জাগানো যাত্রা । সারারাত্রি ব্যাপী…..।

Read more


ধপ্ করে শামুকের বস্তাটা কোমর থেকে নামিয়ে রেখে নিজেও সেই ভাবে বসে পড়ল পলাশী। কোমর যেন যন্ত্রণায় ছিঁড়ে পড়তে চায় --- টনটন করে! কম দূরত্ব নাকি বল্লির বিল ? শামুক ধরে বস্তা কোমরে তোলার পর হাঁটো আর হাঁটো, যতক্ষণ না কোমর ছিঁড়ে পড়ছে, যন্ত্রণায় টনটন করছে ততক্ষণ রেহাই নেই!

Read more


সুধাময় বলল, আমার বড় দুঃসময় যাচ্ছে রে কুশী। বাবাকে বলিস আর ধারবাকি দিতে পারব না। সরু একফালি কুশী দোকানের কোণে জড়োসড়ো দাঁড়িয়ে। হাতে তেলের শিশি, টোলপড়া জার্মান সিলভারের কৌটো, আখের গুড় নিতে হবে। চাল ডাল মশলার ফর্দ, কুশী পথে আসতে তিনবার চারবার আওড়েছে। সুধাময় কলম ধরলেই ঝরঝর করে বলে দেবে।

Read more


কিছু মানুষের মস্তিষ্কে গুজব আর ভুল বোঝাবুঝি, অজ্ঞানতা আর লাগামছাড়া আবেগ অবিচ্ছেদ্য অঙ্গের মত বিদ্যমান। শরীরে প্রতিটা বুলেট গেঁথে যাবার সঙ্গে সঙ্গে তার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল বিপ্লবের প্রতি আনুগত্যের এক একটি স্মৃতি ......... স্বাধীনতার স্লোগানের জবাবে ছুঁড়ে দেওয়া মুষ্টিবদ্ধ হাত ...... গলার শির ফুলিয়ে বলা ‘আজাদী’ ......

Read more


নিকুঞ্জ স্যার আত্মহত্যা করেছেন। এই খবরটা এলাকার প্রায় কেউই বিশ্বাস করতে পারছিল না। নিকুঞ্জ স্যারের মত প্রাণোচ্ছল একটা মানুষ কিভাবে এই কাজটা করতে পারেন। ছাত্রছাত্রী, পাড়াপ্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন সবাইকে যে মানুষটা সবসময় লড়াই করার কথা বলত, জীবনকে নিংড়ে নিয়ে জীবনের যুদ্ধে ফিরে আসার কথা বলত সেই মানুষটা এভাবে জীবন থেকে পালিয়ে গেল কেন? প্রশ্ন অনেকেরই মনে, আলোচনা, পর্যালোচনা, জল্পনা এই নিয়ে প্রতিনিয়তই চলছে। কিন্তু সঠিক কারণ কেউই বুঝে উঠতে পারছে না।

Read more


সর্বনাশ! সকাল সাড়ে আটটা। বিছানা ছেড়ে ধুড়মুড় করে উঠে পড়ল চিকু। অন্যদিন সাড়ে সাতটায় মা জোর করে তুলে দেয়। স্কুলের পুলকার নিয়ে লালাকাকু সোয়া আটটায় চলে আসে। টুথব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে মুখে ঠুসে দিয়ে মা বলে, যাও তাড়াতাড়ি টয়লেট সেরে দুধ খেয়ে নাও। মা ঢুকে যায় কিচেনে। টিফিন বানায়। টিফিন বানানো হয়ে গেলে চিকুর স্কুলের ব্যাগ গোছাতে শুরু করে দেয়। ব্যাগের ভিতর বই, রুমাল, জলের বোতল, পেনসিল বক্স, পেনসিল বক্সে পেন, পেনসিল, ইরেজার ঠিক আছে কি না, সেই সঙ্গে পেনসিলের অগ্রভাগ সঠিক ভাবে শার্প কিনা তন্ন তন্ন করে সবকিছু মা পরখ করে নেয়।

Read more


- না স্যার! এটা আমার উইকিলি নিউজ পেপার। - অত টেকনিকাল পয়েন্ট ধরেন কেন? বেশ! উইকলি বুলেটিনই বলুন না হয়! - সে কি কথা? রেজিস্ট্রেশন আছে বই কি! না হলে করপােরেশনের অ্যাড ছাপছি কিসের জোরে? - না, ডেলি নয়। ছেচল্লিশ দিন বাদে করপােরেশনের ইলেকশন। আমাদের শহরে এখন খবরের হেভি ডিমান্ড! তাই আমার কাগজও ডেলি বেরােচ্ছে। পাবলিক নিউজ খেতে চাইছে সকাল বিকালে চায়ের সঙ্গে, আমিও সাপ্লাই দিচ্ছি! কিছু কামিয়ে নিই এই মওকায়! হাঃ হাঃ হাঃ!

Read more


বাসন্তী, যাওয়ার সময় পিঙ্কির ঐ খেলনা ঘোড়াটা নিয়ে যেও। বাইরে ফেলে দিও। বাসন্তী একথায় অবাক হয়ে বলে ওঠে, ওমা, এটা তো নতুন আছে গো বউদিমনি। আরে ঘর জোড়া হয়ে পরে আছে। এক একটা জন্মদিনে কম তো পায় না। রাখব কোথায় এত? ওটা অনেকদিনের তুমি বাইরে ফেলে দাও।

Read more


আমার নাম সোনু। আমি কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকি। ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছি। আপাতত ছুটি শেষ। আগামীকাল আবার আমি আমার কর্মস্থলে চলে যাব। এই খবর পেয়ে আমার দুই বাল্য বন্ধু এসে হাজির। একজনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী বলরামপুরে। আর একজনের নলডহরী গ্রামে। তারা এসে বলল, কখন এলি সেটাই তো জানলাম না! কাল চলে যাবি মানে! তার আগে কি পার্টিশাটি হবে না?

Read more


বড্ড দেরি হয়ে গেছে আজ। আসলে পার্টি ছিল একখানা। অফিসের পরে গেছিলাম। স্কুলের বন্ধুদের পার্টি। সবাই এখন নানা শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। কখনো একসাথে হলে ডাকাডাকি, ‘আয়, আয়, দেখা কর!’ আবার আসবেও সবাই হেলতে দুলতে। আপাদমস্তক নিখুঁত সাজগোজ, মেকআপ একেকজনের, ও কি আর সহজে বানানো যায়? আর আমার হাল দ্যাখো! অফিস ফেরত উস্কোখুস্কো, পাতি সালোয়ার কামিজ। ওনারা বাড়ি থেকে আসবেন, তাও দেরি। আর আমি ছুটতে ছুটতে হাঁপাতে হাঁপাতে সবার আগে। আসলে আমাকে অনেকদূর ফিরতে হবে যে! ট্রেনে করে। পার্টি ফেরত ওরা সবাই হয় নিজের গাড়ি নাহলে ক্যাব ধরবে আর দোরগোড়ায় নামবে।

Read more


দিবাকরের পিতামহ রাইচরণ শিউলির দাপুটে জমিদারের কাচারীতে ফাই ফরমাস খাটার কাজ করতেন। সেই সময় শিউলির জমিদার বাবুরা এতটাই দাপুটে ছিলেন, ঠিক যেন বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খাওয়ানোর মতো ভয়ঙ্কর।

Read more


বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এলো। খুঁটিতে লাগানো টিমটিমে বাতিগুলো জ্বলে উঠেছে। ইঁট বিছানো রাস্তা ধরে দু একটা করে সাইকেল আসছে ইস্টিশানের দিক থেকে। কোলকাতা থেকে কাজ সেরে ফিরছে ঘরের মানুষ ঘরে। জোছনার পা দুখানি আর যেন চলছে না। বুকের ভেতরটা ধড়াস ধড়াস করছে। প্রায় সাতটা বাজতে এলো। এখনও মেয়েটা বাড়ি ঢুকলো না। স্কুল থেকে ঐ কারখানার গেট পর্যন্ত তো বিথীকা ছিল সাথে। তারপর কারখানার পাশ দিয়ে দশ মিনিটের আকাবাঁকা ইটের পথটুকু তো বরাবর একাই আসে রোজ। আমবাগানের মধ্যে দিয়ে একটা শর্টকাট আছে বটে তবে জোছনা ও পথে যেতে তো নিষেধ করেছিল।

Read more


কয়েকটি অণুগল্প দিয়ে একটি ক্যানভাস সাজানোর চেষ্টা করলেন ফাল্গুনি দে।

Read more


এই লেখা একটি ডায়েরির কয়েক পৃষ্ঠা৷ ডায়েরির লেখক অতুলকথা বাঙাল৷ কারও কৌতূহল হতে পারে এমন অদ্ভুত নাম কেন? পূর্ববঙ্গের কিশোরগঞ্জে তিনপুরুষের ভিটে থেকে উচ্ছেদ হবার পর নলিনীকুমার বসু ভারতে আশ্রয় নেন৷ বিখ্যাত কোনো নেতা বা গুরুর আশ্রয় নেওয়ার মতো নয় একেবারেই৷ প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে শেয়ালদা স্টেশনে লক্ষ দেশভিখারির ল্যাপটালেপটি ভিড়ে নিজেদের কোনোরকমে গুঁজে দেওয়া৷ ‘নিজেদের” মানে নলিনীকুমার, তাঁর স্ত্রী, কন্যা ও নাতি৷ পালানোর সময় নাতির বয়স ছিল চারমাস৷ এই স্টেশনেই দীনভিখারি-অনুষ্ঠানে নামকরণ হয় তার৷ কোটালিপাড়ার ডাকসাইটে ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান অব্যয়ানন্দ শিশুর নাম রাখেন ‘অতুলকথা’৷ আর নলিনীকুমার নতুন পদবি দেন ‘বাঙাল’৷ ছিলেন “বসু’৷ যার দেশ যায়, তার সব যায়৷ পুরোনো পদবি থাকে কীভাবে? তাছাড়া, এরপর তো সবাই “বাঙাল’ ডাকবে, শোনার অভ্যাস হয়ে যাক শিশু থাকতেই৷ অব্যয়ানন্দও খেদা-খাওয়া৷ তিনি ১৯৫২ সালে নলিনীকুমারের কাছ থেকে দু-টাকার পুরোহিত-প্রণাম আদায় করেন এই নামকরণের জন্য৷ ডায়েরিতেই একথা লিখিত আছে৷ অতুলকথার ডায়েরি তিরিশ পরিচ্ছেদের৷ এখানে তার একটি দেওয়া গেল৷ নামকরণ স্বয়ং অতুলকথার৷

Read more


যেদিন মারা যায় তার আগের দিনও হিরালাল স্কুলে এসেছিল। # আমরা তখন ক্লাস সেভেন, ওই যে বয়েসে মাথাটা একটু উঁচু করে একটু দূরে তাকিয়ে দেখার ইচ্ছে হয়, লোভ হয়, সাহসও হয়। হিরালালের চেহারা ছিল বেতের মতো। রোগা বলে রোগা, মানে, শরীরের কোথাও সামান্য চর্বি অব্দি ছিল বলে মনে হত না। হাতের আঙুলগুলি লম্বা, কিন্তু নখে ময়লা লেগেই থাকত, সময়মতো নখ কাটত না, যেমন কাটত না মাথার চুল, আর সেই চুলের কিছু কপালে এসে পড়ত। গায়ের রঙ কালো। শ্যামবর্ণ বলা যাবে না, আরো একটু কালো। চোখদুটো গভীর আর ভেজা, আর প্রায় গাভীর মতোই শান্ত আর অসহায়। মোটা ঠোঁট, চাপা নাক আর অসম্ভব শাদা দাঁত--- সব মিলিয়ে, আমাদের চেয়ে একটু বেশি লম্বা হওয়ায়, একটু আলাদাই লাগত হিরালালকে।

Read more


দক্ষিণ মৈশুন্দি, ভূতের গলির লোকেরা পুনরায় এক জটিলতার ভিতর পড়ে এবং জোড়পুল ও পদ্মনিধি লেনের, ওয়ারি ও বনগ্রামের, নারিন্দা ও দয়াগঞ্জের লোকেরা তাদের এই সঙ্কটের কথা শুনতে পায়; তারা, ভূতের গলির লোকেরা বলে:

Read more


যার যে স্থানে জন্ম, সেই জন্মস্থানের মাটিতে মিশে যাওয়ার অন্তিম বাসনা অনেকেরই হয়। হার্টে প্রথমবার মৃদু ধাক্কা খেয়ে, আবারো বড় অ্যাটাকের আশংকায় আমিও স্বজনদের কাছে শেষ ইচ্ছেটি জানিয়ে রেখেছি। মরে গেলে পৈতৃক ভিটাতেই আমাকে কবর দিও। কার মরণ কোথায়, কখন এবং কীভাবে ঘটবে, কেউ ঠিক জানে না। কিন্তু এটুকু জানি, মরার পর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে দীর্ঘ কবরযাত্রা নিজের জন্য না হোক, জীবিত স্বজনদের জন্য আরামপ্রদ হবে না মোটেও। চাকরিতে অবসর নিয়ে শহরবাসের পালা তাই চুকিয়ে দিয়েছি। শেষজীবনটা কাটাতে চলে এসেছি গ্রামের বাড়িতে।

Read more


বাদামি রঙের কচুরিপানার শুকটি পাতাটা আধমরা ঢেউয়ের চাঁদি ধরে কখনও কোমর কখনও বুক কখনও মাথার টাক টিকি ডুবে জল খেয়ে খাবি খেয়ে যখন বটগাছটার ঝুলে থাকা নেঙ্গুট ঝুরিতে এসে মড়ার ছেঁড়া কাপড়ের মতো ঠেকল তখন কোল খালি করল শারাফন। কোল বলতে গেলে বাঁ কাঁখে জলের ঘড়া আর ডান কাঁখে আঁচল গুঁজে ঠেসে ধরা ভাত তরকারি বাঁধা গামলার একটা পুঁটুলি।

Read more


আমি বৃষ্টির কথা ভাবি : বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি অনেকটা দুঃখের মতো আমাকে জড়িয়ে রাখে। আমি বৃষ্টির কথা ভাবতে ভাবতে দুঃখের কথা ভাবতে থাকি। দিনগুলো বদলে যায়, বদলায় না দুঃখ। অজ্ঞতার চেয়ে বেশি অন্ধকার কোথাও নেই। শেক্সপিয়র থেকে শিখেছি। হয়তো দুঃখের বদল হয় না। যে-দিনগুলো হারিয়ে যায় সেই দিনগুলোই বেঁচে থাকে।মানুষ খারাপ কাজ করে, সেগুলোকে ঢেকে রাখে আলখাল্লা পরা মানুষরা। নিজের থেকে নিজেকে শেকড় থেকে উচ্ছেদ করতে পারি না। এখানেই আমার পরাজয়। আমার বয়স বাড়ে, আমার ভালোবাসার বয়স বাড়ে না। তোমাকে বিদায় বলি : বিদায় বিদায়।আমি বৃষ্টির দিকে চেয়ে থাকি, আর নিজেকে শুনিয়ে বলি : বিদায় বিদায়।

Read more


মানুষটা কালীনাথ বড় চুপচাপ। তবে কাজের লোক। ছোট-বড় যে কোন কাজ বড় মনোযোগের সঙ্গে করে। বড় কাজ করার সুযোগ অবশ্য তার জীবনে আসেনি কখনো। 'চিন্তাহরণ মেডিকেল স্টোর'-এ ওষুধ বেচে আর মিকশ্চার তৈরী করেই তার তিরিশ বছর কেটে গেলো, ২৫ বছর বয়সে ঢুকেছিলো এখানে, এখন চুল দাড়ি পেকেছে, চামড়া কুঁচকেছে, গাল মুখ ভেঙেছে, কপাল চওড়া করে টাক পড়েছে, মানুষটার স্বভাব বদলায়নি। আগে ধুতির ওপর হাতে-কাচা হাফশার্ট পরতো, ৬৪'র দাঙ্গার পর ধুতি ছেড়েছে, এখন তার নিত্যদিনের পোশাক শার্ট পাজামা।

Read more


নাম বলুন আপনার। নাম? আমার নাম অর্চনা। অর্চনা মণ্ডল। আপনার বাড়ি কি এখানেই? মানে এই বীরভূমেই? না না। আমার বাড়ি অন্য জায়গায়। এখেনে তো আছি... এই বছর ছয়-সাত হল। আপনি তো বহুদিন যুক্ত রয়েছেন অভিনয়ের সঙ্গে... এই কাজ সম্পর্কে বলুন না দু’চার কথা... আপনার অভিজ্ঞতা... আমাদের শ্রোতারা শুনবেন।

Read more


বারোতলার উত্তর-পূর্ব কোনের ফ্ল্যাট অপরেশবাবুর। সূর্যাস্ত এখান থেকে দেখা যায় না। শুধু শেষ বিকেলের আলো কিভাবে আস্তে আস্তে কমে আসে চারপাশে - সেটাই অনুভব করা যায়। আলো কমে এলেই দেখতে পাওয়া যায়, আলো জ্বলে উঠেছে এই স‍্যাটেলাইট সিটি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ - ঐ ফ্লাইওভারের মাথায় মাথায়। ঐ রাস্তা ধরে ঠিক সতেরো মিনিট এগোলেই - ব‍্যস্ত শহর, মাল্টিপ্লেক্স, শপিং মল আর হৈ-হুল্লোড়।

Read more


ভাবছিলাম গোরাদার ওখানে যাব। সেই ছোট বয়সে গিয়েছিলাম যখন ছোটরা ছোটর মতো থাকতে ও দেখতে হয়। সেই ছোটবেলায় চারপাশের গাছের সঙ্গে মাপতে মাপতে ছোট হতে হতে, চারপাশের সব বাড়ি ও জানলা কপাটগুলোর সঙ্গে গোটা বাড়িটাকে অনেক বড় মনে করতে পারে যে ছোটবেলায় সেখানে গিয়েছিলাম। যাত্রাপথ অতি মঙ্গলসম ছিল খারাপ কথারা ও গালাগাল ভীড় ট্রেনের জানলার ভেতর দিয়ে যাতায়াত করেছিল বটে তবে সুপ্রচুর ভেজানো ছোলা নিয়ে গিয়েছিল রিন্টু।

Read more


বারান্দায় গ্রিলের হুক খোলামাত্র শব্দ পায় রীতি। আর তাই জুতোর ফিতে টানতে টানতে দরজার ওপাশে ওর পায়ের শব্দ অনুমান করবে অবিনাশ। অনুমান করবে ওই হালকা আর ছিপছিপে শরীরটি দরজার কাছে এসে দাঁড়াচ্ছে। হাত রাখছে ছিটকিনিতে। আর অবিনাশও এমনকী ফিতে খোলা হয়ে গেলে, একবারও রীতির নাম ধরে না ডেকেই, দরজার ছিটকিনি টানার শব্দ শোনার জন্য অপেক্ষা করবে। আর সময়টা হিসেবের বাইরে গেলে— অবশ্য ও ঘুমিয়ে থাকলেই একমাত্র হতে পারে তা, অবিনাশ বড়জোর ওর নাম ধরে ডেকে উঠবে একবার।

Read more


অনুকূলদের বাড়িতে ঘড়ির ছড়াছড়ি। ওর ঘরে, বাবা-মার ঘরে, ঠাকুরদার ঘরে সর্বত্র। সেদিন অনুকূলকে ভোরে উঠিয়ে পড়তে বসিয়ে দিয়ে গেলেন ওর বাবা দিগম্বর পাল। চোখ তুলে দেখে নিলেন পাঁচটা বারো বেজেছে। সাড়ে দশটা পর্যন্ত পড়তে হবে বাছাধনকে। মাঝখানে শুধু চা-জলখাবার। অন্তত চারঘন্টা পড়া ঠেকায় কে! পড়তে বসতে হলেই ছেলের যত যন্ত্রণা।

Read more


১। আজ অনেকদিন আগের সমস্ত কথা মনে পড়ছে। রেহানা, বেশ কিছুদিন হলো, সবুজের জীবন থেকে চিরতরে হারিয়ে গেছে। ঠিক ঠাক হিসেব করলে প্রায় কুড়ি বছর হলো, আজ রেহানা নেই। অনেক চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি। ডাক্তারেরা যে চেষ্টা করেননি, তা নয়। কিন্তু তাও পেরে ওঠেননি। তারপর থেকে সবুজ একা।

Read more


তারাপদ না! তারাপদ! সে এখন কোত্থেকে আসবে! সে তো চলে গেছে বহু কাল। কিন্তু হাঁটাটা দ্যাখো, অবিকল তারই। ধুর, তারাপদ এমন বেঁকে হাঁটত নাকি!

Read more


বিয়ের ক’দিন পরেই নাজমা জুম্মানের চোখে নাজ হয়ে উঠল। বেশ সুর করে ডাকত, ও নাজ, এখন কী হেঁসেলে? জুম্মানের বয়স ছাব্বিশ, নাজমার চব্বিশ। সুরেলা ডাকের তাৎপর্য নাজ যে সবটুকু হজম করতে পেরেছিল, তা বলা যাবে না। বুদ্ধির ফাঁক গলে অনুভূতির আয়নায় যে ছবি ভেসে উঠত মনের ক্যানভাসে, তাতে নাজ বুঝেছিল, লোকটা তাকে সত্যি সত্যি মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। এমন কী নিজেকে ‘জুম’ বলে ডাকতে জুম্মান জোর দেখিয়েছিল নাজ-এর উপর। সবই রোমাঞ্চঘটিত কাকতালীয়।

Read more

by মুসা আলি | 26 December, 2021 | 0 Comment(s) | 1153 | Tags : Short Story Chhitmahal


ঠোটকাট্টি ভিখ-সফর সেরে বাড়ি ফিরছে। তার কাঁখে, মাথায় ভিক্ষায় পাওয়া ধান-চাল বাদেও আরও কতকিছু বাঁধা বোঁচকাবুঁচকি। সঙ্গী খেপি বিটি সজ্জা, তার মাথাতেও বেশ বড়সড় একটা বোঁচকা। খোদার রহমতে অন্যান্য বারের তুলনায় এবারেও তার সফর-আমদানি বেশ ভালোই হয়েছে।

Read more


বাবার কিনে দেওয়া নতুন ব্যাগটার দিকে ব্যাজার মুখে তাকিয়ে ছিল রুনাই। ব্যাগটা তার একেবারেই পছন্দ হয়নি। দীর্ঘদিন পর আবার স্কুল খোলার তোড়জোড় চলছে। একটা রোগের পাল্লায় পড়ে বাচ্চাদের শিক্ষা একেবারে ধ্বংসের মুখে এসে পড়েছিল। উঁচু ক্লাসগুলো আবার শুরু হয়েছে নানারকম নিয়ম বিধি অনুসারে। নীচু ক্লাসগুলোও স্কুলে আবার শুরু করার তোড়জোড় চলছে। রুনাই আগে থেকেই তার বাবাকে বলে দিয়েছে নতুন স্কুলব্যাগ না হলে সে কিছুতেই স্কুলে যাবে না।

Read more


“চলো, আমরা কোথায় একটু বসি।” “বসবে? আচ্ছা, চলো। দেখি কোথায় বসা যায়।” “না, তোমার যদি কোনো প্রবলেম থাকে এতে তা হলে থাক।” “আমার আবার কীসের প্রবলেম!” “যদি থাকে আর কী। তুমি তো আবার বড্ড লাজুক। দেখা গেল মুখের ওপর সহজে ‘না’ বলতে পারছ না।” হেসে হেসে বলল মেয়েটি।

Read more


কনক বোসবাড়ির কাজটা তাড়াতাড়ি সেরে রওনা দেয় দত্তপুকুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনে। আগে বোসবাড়ির রান্না, বাসনমাজা, কাপড়কাচা, ঘরের মেঝে মোছা, উঠোন ঝাঁট দেওয়া সব কাজই করতো। কি এক রোগ এলো পোড়া দেশে। ওরা সব কাজ বন্ধ করে দিল। অনেক কাকুতি মিনতি করে আধা মাইনেতে বাইরের বাগান আর উঠোন ঝাঁট দেওয়ার কাজটুকু বজায় রেখেছে। তার স্বামী পরেশ পল্ল্যে বোম্বে গিয়েছিল সোনার কাজ করতে। সেখানেও করোনা দেখা দেওয়ায় মালিক কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। বলে দিয়েছে যে যার দেশে ফিরে যেতে। তাদেরই বা দোষ কি। বাজার বন্ধ, দুবাইয়ের খদ্দেররা আর আসছে না। বসিয়ে বসিয়ে কতদিন তাদের খাওয়াবে।

Read more


আমার ছেলেবেলা যে বাড়িতে কেটেছে সেটি ওপার বাংলার চলচিত্র পরিচালক মৃণাল সেনের জন্মভিটা। ফরিদপুর, ঝিলটুলী। বাড়িটি ১৯৪৭ সালে আমার মায়ের দাদা আয়নুল ইসলাম চৌধুরী’র কাছে মৃণাল সেন-এর পিতা এডভোকেট দীনেশ সেন বিক্রি করে দিয়ে ওপারে মানে পশ্চিম বঙ্গে চলে যান। সে-সময় মৃণাল সেন তরুণ, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। বাড়িটি প্রায় ১ একর ৮২ শতাংশ জমির ওপর। মূল বাড়ি ছাড়া সামনে বাগান এবং পেছনে বড় পুকুর আছে। মৃণাল সেনের ছোট বোন রেবা ওই পুকুরে পড়ে মারা যায় ওনারা বাড়ি ছাড়ার বছর দশেক আগে ।

Read more


টার্গেটের সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে আর ইয়েতির মত বসটার লাল চোখ দেখে কোনোমতে রাতজাগা কফিময় সপ্তাহটা কাটলো। রবিবারের ক্যাবলা বিকেলটার মাদকতাই আলাদা,অনেকটা অবৈধ প্রেমিকের মত! অন্য সপ্তাহগুলোর মত ল্যাদ খেয়ে পড়ে না থেকে নিজেকে বললাম--"জাগো বাঙালী জাগো,কবে আর বাঁচতে শিখবে...." ইত্যাদি! গুগলদা আসার পর থেকে দিকশূন্যপুরে হারিয়ে যাওয়ার বিলাসিতা করা হয়নি অনেকদিন,তাই ফোনটাকে বাড়ি রেখে "দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া" গোছের একটা হাবভাব করে গলি খুঁজতে বেরিয়ে পড়লাম!

Read more


হাওড়া জেলার নারিকেলদহ গ্রামে আমাদের পৈতৃক বাড়িটা পেল্লায় বড়। দোতলায় আটটা শোবার ঘর। তারই মধ্যে বাড়ির পশ্চিম দিকে দুটো ঘর নিয়ে থাকে আমার জ্যাঠতুতো দাদা, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে। আর থাকে ওর ল্যাব্রাডর কুকুর কালু। কালু নামটা বড়ই বেমানান কারণ কুকুরটা ধপধপে সাদা। বাড়ির পূর্ব দিকটা বেশির ভাগ সময় তালা দেওয়াই থাকে। নিচের তলায়, মানে একতলায়, বেশির ভাগ ঘরই ভাড়া দেওয়া। ছোট ছোট পরিবার। তাদের ছেলেমেয়েরা সবে থ্রী -ফোর এ উঠেছে।

Read more


বাপের জম্মে ব্যবসা এত মন্দা যায়নি নিতাই দাসের। অজ পাড়া গাঁ হাটবারে মাঠের মধ্যে বট গাছের নীচে দোকানের বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে ব্যবসা করে নিতাই। এই ভরা বর্ষায় মরশুমে এভাবে অস্থায়ী দোকান বসাতে খুব অসুবিধে হয় ঠিকই কিন্তু অন্যান্য বছর খদ্দের থাকে এই সময়টাতেই। কত গ্রামের লোকের কত সমস্যা। সব সমস্যার সমাধানই মজুত নিতাই দাসের কাছে। এভাবে গ্রামে গ্রামে হাটবারে দোকান খুলে বসলেও পলার পার গ্রামের গোবিন হালাইয়ের চা স্টলেই নিতাইয়ের মূল ঘাঁটি।

Read more


সত্যি কথা বলতে কি, আমার যাবার তেমন ইচ্ছে ছিল না। ফিরে আসার পরেও মনে হচ্ছে, না গেলেই কি ভাল হত? শুধু তো ক’টা টাকার জন্য। কাজটা পড়েছিল শুক্রবারে। তার মানে আবার অফিসে ছুটি নিতে হবে। ছুটির দিন হলেও না হয় একটা কথা ছিল। চট করে যাওয়াই যায়। কিন্তু, শুক্রবার সারাদিনের কাজ। ব্যস্ততার বহর এখন ঠিক বোঝাও যাচ্ছে না। খোলসা করে ওরা বলছেও না কিছু। অথচ ভোরবেলাতেই বেরিয়ে পড়া, গভীর রাত অবধি কাজ। যদি কোনও কারণে শুক্রবারের পরের দিনটা অফিসে না যেতে পারি, সোমবার অফিসে ঢুকে বড়সাহেবের মূর্তির দিকে আর তাকানোই যাবে না। ভাবছি বেশ খানিকক্ষণ। ভাবার সময় দিলে তো। মুম্বই থেকে ক্রমাগত তাগাদা দিয়ে চলেছে রাজু। সমানে মেসেজ। শিগগির জানান। এটা বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে প্রজেক্ট। আপনি রাজি হলে তবেই ওদের সঙ্গে ফাইনাল কথা হবে। অফিসের কাজের ফাঁকে টুং টাং করে হোয়্যাটসঅ্যাপ মেসেজ। এই এক জ্বালা হয়েছে। যখন-তখন যেখানে-সেখানে ফোন বেজে ওঠে। ফোনে পাওয়া গেল না তো তাকে খুঁচিয়ে যাবার একশো এক তরিকা। নিঃশ্বাস নেবার ফুরসত দেবে না। যাকে চাই, তাকে তক্ষুনি চাই।

Read more


জাতীয় সড়ক থেকে বাঁদিকে এই যে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়কটা ঢুকে হারিয়ে গেছে দুপাশের সবুজ ক্ষেতখামারের মধ্যে ঠিক তার একটু আগে গাড়িটা থামাল শুভম। গাড়ি বলতে স্কুটি। পেছন থেকে আস্তে করে রাস্তায় নামল হিমু— হিমাদ্রি। খা খা পিচ সড়ক। ভাদ্রের ভরদুপুরের অক্লান্ত সূর্যালোক সেই সড়কের ওপর দিয়ে পিছলে যাচ্ছে। হেলমেটটা খুলতে খুলতে হিমু দেখল সামনে সড়কের ওপর জলরেখার মৃদু মৃদু কম্পন। মরীচিকা। বাঁকের মুখেই দাঁড় করানো পুলিশ জিপটা থেকে একজন খাকি উর্দি এগিয়ে এল ওদের স্কুটির দিকে। অফিসার না কনস্টেবল? মরুক গে! এই জিপ এবং তার ভেতরের মানুষগুলোর এই জায়গায় অবস্থিতি, অবাঞ্ছিত হলেও, গোচরে ছিল ওদের। --কোথায় যাচ্ছেন? --বন্ধুর বাড়ি। হেলমেটটা খুলে মাস্কটা নামাতে নামাতে বলল শুভম...

Read more


নারী নরকের দুয়ার; অতঃপর আমিনা পানির কুলকুল ধারাপাতে সিক্ত নিজেকে বিধৌত করতে থাকে অবিশ্রান্ত; দেহ খানি পানির ছলছলানিতে মুখরিত। পানির ঢলানি দেহজুড়ে অবসাদ-গ্লানি হতে উত্তরণ করে চলে। সূর্যের প্রথম অরুণ কিরণ অংকিত প্রত্যুষে। শীতলতা কুয়ার পানির; আমিনা কুয়া হতে পানি তোলে; পানি মাথায়, সর্বাঙ্গে ঢালে। অনর্গল, গলগল করা এই পানির প্রবাহে ভিজে চলে সে। জলক্রীড়া তার শরীরময়।

Read more


বিরিয়ানির খুসবু পাচ্ছে ওসমান। কিন্তু সত্যিই কি? না কি সে শুধুই ভেবে নিচ্ছে নিজের মতো করে। সে ভেবে নিচ্ছে বিরিয়ানির ফিনফিনে আর ফরসা চালের কথা। ভেবে নিচ্ছে এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ বা জাফরানের কথা। গোস্তের মশলাদার টুকরো। আলু। আর পাতের উপর থেকে মুখের দিকে উঠে আসতে থাকা গরম ভাপের কথা। শালপাতার থালায় ঢেলে দেওয়া ফিনফিনে ভাতের গা থেকে থেকে উঠে আসা ধোঁয়ার সেই উমো উমো উষ্ণতা পেয়ে ওসমান কেমন ‘আহ্‌’ করে উঠল ভাবো। আর পাশে বসে থাকা ফকির কেমন বলে উঠল, আল্লারে ডাক এখন, কাঁদাকাটা করে লাভ নাই, এখন ফেরেশতারাই— । আর ফকিরের কথাতেই চোখ খুলল ওসমানের। হায় আল্লা, এসব কী ভাবছিল সে! ওসমান তো এখন বাড়ির বারান্দায় মা হাসিনা বানুর বালিশ ঘেঁষে বসে। কাল বিকেলে দেখতে এসে মৌলবি ওমর আলি জবাব দিয়ে গেছে। বলে গেছে, ফুকে আর হবার নয় কিছু, পারলে খাজা খতম পড়া। দুআ কর। সবার দুআ আর আল্লার মেহেরবানিতে যদি— ।

Read more


দিন পনের ধরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নো ম্যানস ল্যান্ডে পড়ে আছে এক নারী। নিজেকে মানসিক ভারসাম্যহীন প্রমাণ করার মতো সমস্ত আয়োজন ওর পোশাকে আছে। বাড়তি একটি পা অচল হওয়ার কারণে তাকে ঢাকা কিংবা কলকাতার ফুটপাতে পড়ে থাকা ভিখারি হিসেবে ভেবে নিতেও অসুবিধা হবে না কারো। নো ম্যানস ল্যান্ডের নিচু জমির দুপাশে পানির মাঝখানে একটা বাড়ির সমান উঁচু ঢিবিতে নারীটি পড়ে আছে। কিভাবে গেল, কোনদিক থেকে গেল, এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।

Read more


ধুসর রঙের পর্দাগুলো উড়ছে। কেউ যেন বাতাস লেলিয়ে দিয়েছে ওগুলোয়। প্রলয় বাতাস। একজন নিঃসঙ্গ ঘোড়সওয়ার দাঁড়িয়ে পড়েছে দূরে। আমি তবু এগিয়ে যাচ্ছি এক-পা এক-পা করে। আকাশ থেকে ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে আলো। একখণ্ড মেঘ উড়ে এল কোথা থেকে। নেমে এল যেন একটা প্রাচীনকাল। দেখলাম ঘোড়সওয়ারটা এবার পালাচ্ছে ধুলো উড়িয়ে। যেদিক থেকে এসেছিল সেই দিকেই পালাচ্ছে। আকাশ থেকে কী পড়ছে ওগুলো! এক-একটা ইতিহাসের পাতা! উড়ে যাওয়া সেই পাতা থেকে খসে খসে পড়ছে সাদা কাপড়ের মোড়ক।

Read more


“আল্লাহ দান করে যাবে হাশরের ময়দানে……বান্দা……।“ বুঁদ হয়ে আছে তজু। দুই হাড়গিলে হাঁটুর মাঝে ঠেসে গোঁজা উসকোখুসকো মাথা। তজু ভাবছে, ইহকালে কী আর আছে? ক-দিনের জন্যে আর এই শরীরজীবন? আল্লাহর হুকুম হলেই, দপ করে নিভে যাবে। আসলবাড়ি তো কবর। যতদিন যাচ্ছে ততই বেবাগি হয়ে উঠছে তজু। তাকে সংসারে বেঁধে রাখতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে মারিয়ম। মাঝেমধ্যেই ঠুকমুক লেগে যাচ্ছে দুজনে। মারিয়মের মোদ্দাকথা, তার স্বামী গায়ে-গতরে খাটুক, অন্য পাঁচটা লোকের মতো হকের রোজগার করুক। কারও ঘাড়ে চেপে ভাগের উপার্জন বন্ধ করুক।

Read more


“তপু আজও ফিরে নাই- মিনু দেখল বাবার গলার স্বর ক্রমশ অস্পষ্ট হয়ে আসছে। দু’চোখের পাতায় ঘুম এলিয়ে পড়েছে। তপু বা তপন জগদীশের ছেলে, মিনুর একমাত্র দাদা। পারিবারিক দোকানের মাল সওদা করতে সদরে গেছে দিন সাতেক হল। এখনও ফেরেনি, দিন দুয়েক ধরে বৃদ্ধ দিনে অন্তত বার চার পাঁচেক ছেলের কথা জিজ্ঞেস করে। ওষুধ খাওয়ানো হয়ে গেছে। এখন মিনু তোয়ালে দিয়ে বাবার মুখ মুছিয়ে সাদা চাদরটা বুক বরাবর তেনে দিল। বাবার মাথায়, কপালে হাত বুলিয়ে মমতার গলায় বলল – লক্ষীছেলের মতো ঘুমিয়ে পড় –”

Read more


ঘরে মন টেকে না বিনোদ ডোমের। মাঘের ছ-তারিখ হয়ে গেল। পৌষের তেইশ তারিখে মহাজন এসেছিল। তিনপণ কুঁড়চির মালা ঘরে গাঁথা পড়ে আছে। হাতে টাকা না এলে গাছ আনতে পারবে না। বন-কমিটির ফি জমা দিতে হবে। হাতও ফাঁকা, সংসারও ফাঁকা। বউ গেছে বড়োমেয়ের ঘর ডিহরে। শৈলেশ্বরের মেলায় তিনদিন ভিডিও-শো হবে। মেয়ে খবর পাঠিয়েছিল। ছেলে গেছে আরামবাগ। আরামবাগের যাত্রাদল তেরোখানা আসর পেয়েছে। ছেলে ফুলুট বাজাবে। নাতিদুটো গোল্লায় গেছে। বাঁশির বদলে বাঁশ ধরেছে। দিনেরবেলা এর-তার জমিতে খাটে, রাতে বনের পথ ধরে মানুষজন গেলে মাথায় লাঠি তোলে।

Read more


শোনা গল্প। বন্ধুর কাছে শোনা। অনেকদিন ধরেই ভাবছি সবাইকে গল্পটি শোনাই। ভাবছিলাম কোথা থেকে আরম্ভ করি। শোনা তো, একটু এলোমেলো ছিলই। তার ওপর বলেছিল, আসলে গল্প নয়। গল্প নয় মানে সত্যি। হতে পারে, না হওয়ার সম্ভাবনাও আছে। অথবা কোথাও সত্যি, কোথাও আবার কাল্পনিক সুতো দিয়ে মুড়ে দেয়া। গল্পটি একদিক দিয়ে দেখতে গেলে অনসূয়ার। অনসূয়ার একসময় মনে হতে থাকে কেউ হয়ত তাকে হত্যা করবে। অন্যদিক দিয়ে দেখলে গল্পটি বলা যেতে পারে প্রিয়াংশুরও। প্রিয়াংশু একদিন জানতে পারল তার স্ত্রী এইরকম ভয় পাচ্ছে। আসলে তখন চারপাশ থেকে অতিরিক্ত খুনখারাপির খবর আসছিল। সে এক বর্ষার রাত্তির। দুই বন্ধু, ঘর খালি, বোতল নিয়ে বসেছিলাম। তা কথা হচ্ছিল ওই খুনটুন নিয়েই। আমি জিগগেস করেছিলাম--- খুন করার পরে অপরাধী সারাজীবন নিজের বউবাচ্চার সঙ্গে কেমন আচরণ করে?

Read more


নলিনীকান্তর দুর্লভ যত সংগ্রহ আছে তার মধ্যে থেকে একটিকে আজ বার করলেন তোরঙ্গ থেকে। একটি ছবি। স্বচ্ছ প্লাসটিকের প্যাকেটে ভরে বিছানার ওপর রাখলেন। তক্তপোষের অর্ধেকটা দখল করে আছে বইখাতা, খবরের কাগজের কাটিং ভরা গোটাকতক ফাইল আর চেপ্টে যাওয়া দুটো বালিশ। সুপর্ণা, বড় ছেলের বউ ইস্ত্রি করা ধুতি-পাঞ্জাবী রেখে গেছে বিছানার ওপর। পরতে পরতে বললেন, 'খাবার হলো বৌমা?’

Read more


হায়দরাবাদ থেকে মল্লিনাথ কলকাতায় ফিরছেন। এসেছিলেন ছেলের সঙ্গে। ক’দিন হায়দরাবাদে কাটিয়ে ফিরছেন। একা ত্রিশ ঘণ্টার জার্নি খুবই ক্লান্তিকর। থ্রি-টিয়ার নন-এ.সি. কোচে রিজার্ভেশন। হাওড়া থেকে রিটার্ন জার্নি করা ছিল। ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। ওদের ছুটি নেই। নতুন চাকরি। বছরে এক-আধবারের বেশি আসতে পারে না। প্রথমদিকে তাঁকে আর মা-কে ওখানে যাওয়ার জন্য ঘন ঘন ফোন করত। মল্লিনাথ বুঝতেন প্রথম প্রথম শুভময়ের মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছিল। তবু মানুষকে সব রকম পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। শুভময় এখন যেমন মানিয়ে নিতে পেরেছে। তাঁর-ও ছিল বদলির চাকরি। সারা জীবন এক জেলা থেকে আরেক জেলায় ঘুরে তাঁকে চাকরি করতে হয়েছে। এখন ভাবেন সেটা ভালোই হয়েছিল। নিজের রাজ্যকে চেনার সুযোগ পেয়েছিলেন। চাকরির সুবাদে শুভময় ভারতবর্ষকে দেখার সুযোগ পেয়েছে। এই অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই ওর জীবনে কাজে লাগবে।

Read more

by অমর দে | 08 August, 2021 | 0 Comment(s) | 1192 | Tags : A Short Story Amar De Amma


মনের ভিতরের একটা জানালা খুলে দিয়েছে নীরালি। নামের বৃত্তান্ত নাই বা জানলে তোমরা, শুধু এইটুকু জেনো যে তার নাম নীরালি, মেয়ে ছাড়া কাকে নিয়েই বা কবিতা আর কাকে নিয়েই বা গান গল্প বলো! বড়ো লাচার বাবো, ইঞ গালমারা ক্যা শুনবে? ইয়া তো লিতকার গালমারা, এই তো ধর ক্যানে চয়ত মাস্যের র‍্যোদ বটে গো মাথার অপরে, বারোটা চাঁন্দুবুঙ্গা মাথাটকে ফাটিন্দিচ্ছে র‍্যোদে, মাটিটর অপরে ট্যাংট তো রেখায় যায় না খো। কেন্তনা সি কুন ছুটু থেকে গোগোর তি ধরে আগুনের অপরে হ্যাঁটে হ্যাঁটে পায়ের তুলাটতে তো ঘুড়ার পারা লুহার ল্যাল পিন্দে লিয়েছি! মাটিট ক্যামুন লিজের হুয়ে যেলছে দ্যাখ আপনি থেকেই। তো কুথা যাব্বো কুন ব্যাগে যাব্বো গো! বাবোকুড়া কুন ব্যাগে যাব্বো?

Read more


১ বামনদের গ্রামের পাশে একটা মস্ত বড়ো ঝিল ছিল। সেই ঝিলের ওপারেই ছিল খেলার মাঠ। সেই মাঠে খেলতে যেতে ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের খুব কষ্ট হতো। সকালে বা বিকালে হাঁটতে যেতে বূদ্ধ বা বূদ্ধাদের দম বেরিয়ে যেত। ঝিলের গা দিয়ে অনেকটা ঘুরে তবে তারা সেই খেলার মাঠে পৌঁছত। একদিন গ্রামের মোড়ল বললেন, আমরা এই ঝিলের ওপর একটা ব্রিজ বানাব। তোমরা রাজি তো? গ্রামের সবাই এই প্রস্তাব শুনে একদম হইচই করে উঠল।

Read more


ভোর বেলায় বেশ কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেলো। এখন থেমে গেছে। জাম গাছের মোটা পাতাগুলো এখনো কিছুটা জল ধরে রেখেছে তাদের সর্বাঙ্গে। সজনে পাতাগুলো তুলনায় তাদের ঝাড়া ঝাপটা চেহারা এখনই শুকিয়ে নেবার জন্যে হালকা রোদে গা নাড়া দিয়ে দিয়ে শুকিয়ে উঠছে। এসে গেছে ছাতারে পাখির দল। ভিজে মাটির উপরে ভিজে পাতা উল্টে উল্টে খুঁজছে তারা পোকামাকড়। ডালে ডালে নড়াচড়া করতে শুরু করে দিয়েছে কাঠবিড়ালির দল। একটা বেজি বেরিয়ে এলো বাগানের কোন থেকে, সঙ্গে একটা বাচ্চা। এগিয়ে আস্তে আস্তে একেবারে জানালার কাছে এসে পড়লো। তারপর মুখ তুলে দেখতে পেল মুগ্ধাকে - আর দেখতে পেয়ে নব্বই ডিগ্রি কোণে বেঁকে পালিয়ে গেলো ডানদিকের পাঁচিলের ধারে।

Read more


কবিতার প্রতি ওর অনুরাগ ছিল প্রগাঢ়। নির্মলেন্দু গুণের সমস্ত প্রেমের কবিতা ছিল ওর মুখস্থ; প্রেমিকাদের হৃদয় হরণে এই গুণটি বেশ কাজে লাগাতে পারত ও। ওইগুলোর মধ্যে কিছু কবিতা যে ওর বানানো, তা শফিক না বললেও আমি বুঝতাম।

Read more


একেবারে সত্যি কথা। মাস্টারি করে আমাদের মানুষ করা যেখানে আমার আব্বার লক্ষ্য, সেখানে সাবেদ সেখের লক্ষ্য বছর বছর জমি কেনা। এই তো, গত বছর আমার বড়ভাইকে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি করতে প্রচুর টাকা লেগেছে। ওই টাকা জোগাড় করতে আব্বাকে আমাদের মরিচডাঙার আড়াই বিঘার দাগটা বিক্রি করতে হয়েছিল। মরিচডাঙার সেই আড়াই বিঘা জমির মালিক এখন সাবেদ সেখ। স্বভাবতই সাবেদ সেখের ওরকম কথা বলা সাজে। আব্বা কিংবা আমরা তার ওই সব কথা নিয়ে ভাবি না।

Read more


জোব বলল, " এককালে ছিল। সরকার‌ই সে সব অক্ষর পরিচয় ও অংকের ব‌ই ছেপেছিল। পরে সে সব ব‌ই ফুরিয়ে যাবার পর আর ছাপেনি। মহাকরণে পাঁচ-সাত বছর ধরে যাতায়াতের পরে‌ও কোনো সুবিধে করতে পারেনি। তারপর ব‌ইয়ের আশা ছেড়ে দিয়ে শ্রুতি আর স্মৃতির উপর বত্রিশটি রাত-পাঠশাল চলছে।"

Read more


পাখিদের কনসার্ট , নিষ্পাপ ভোর , বেহালার সুরের মতো অস্তরাগ , পূর্ণিমায় নেমে এসে গল্প করে চাঁদ , অমবস্যা রাতে জ্যোতিষ্কদের মেলা , দারুণ ৷ খুব সুখেই ছিল তিনজন আত্মা , ইদানিং সেই সুখ নিজ নিজ কারণে অসুখের গভীরে তলিয়ে যেতে বসেছে ৷

Read more


শিবনাথ মালাকার গ্রামের মাতব্বর। প্রভূত ধন সম্পত্তি, সেই সুবাদে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বিধানসভা তপশীলি সমষ্টি হয়ে গেলেই নাকি শাসক দলের ক্যান্ডিডেট এমন কানাঘুষো। শিবনাথ কাকুর সঙ্গে পল্লবদের পরিবারের একটা অম্লমধুর সম্পর্ক অনেকদিন থেকেই। রক্তারক্তির একটা শিশুকাণ্ড ঘটেছিল বাবার বালক বয়সে। যদিও সেসব চুকে বুকে গেছিল শৈশবেই। সম্পন্ন দুই কৃষক পরিবারের ছেলেরা বন্ধুই ছিল, কিন্তু পিসের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না শিবনাথ কাকার। শিবনাথ মালাকারের বাড়াভাতে ছাই দিয়ে যে বিয়ে করে ফেলল আপিকে।

Read more


সকলে আশ্চর্য হয় এমন নতুন ঠাকুরের নাম শুনে। একজন জিজ্ঞেস করে " এ আবার কোন ঠাউর গো বিশ্ব? কত ঠাউরির নাম শুনিচি, এ ঠাউরির নাম তো শুনি নাই।"

Read more


টেস্ট হল। রঞ্জিতের রিপোর্ট এল করোনা পজিটিভ। সেইসঙ্গে দ্রুত অবনতি হল শরীরের। বেশী সময় দিল না রঞ্জিত। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বা অক্সিজেন সিলিন্ডার এসে পৌছনোর আগেই শেষ নিঃশ্বাসটা আর ধরে রাখতে পারল না স্মিতার সরকারী কর্মচারী স্বামী।

Read more


ছেলেগুলো চলে গেলে ফাঁকা বাড়িটাও একা হয়ে যায়। পুরোপুরি একা হয়ে যান অবনী মাস্টার। এত দিন তবু অলকানন্দা ছিল। প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে, সুখে-দুঃখে দুজনে দুজনের পাশে থাকতেন। ভরসা পেতেন স্ত্রীর সঙ্গে নিজেদের দুঃখ-কষ্ট ভাগাভাগি করতে গিয়ে। গত বছর হঠাৎ করেই অলকানন্দা চলে যাওয়ার পর এখন আরও একা হয়ে গেছেন তিনি। যে রাতে অলকানন্দার হাতটা ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল, মাস্টার বুকের কাছে টেনে নিয়ে টের পেয়েছিলেন অসাড়। কিন্তু কিছুই করতে পারেননি। হয়তো সময় হয়ে গেলে কারোরই কিছুই করার থাকে না।

Read more


মিলিয়ে যায় রাতে পরম শান্তিতে ঘুম আসে মহাদেবের । শেষ রাতের স্বপ্নমাখা চোখে দেখে - দূরে - আরো দূরে - বহুদূরে তার পক্ষীরাজ ঘোড়া , গিলে করা ধুতি পাঞ্জাবী উড়িয়ে ছুটে চলেছে । ঘড়ি , আংটি , হার , বোতামের ঝিলিক ঝাপসা হ'তে হ'তে হ'তে - একসময় ।

Read more


সিমিকে মারলে ও নিজে ভীষণ আহত হয়। কোলের মধ্যে মুখ গুঁজে মেয়েটা অভিমানে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। বিজন হেরে যাবার মতো অসহায় বোধ করে। আগে তাপু সিমিকে বকলে বিজন চাপা রাগে গরগর করতে করতে তিন দিন কথা বলা বন্ধ রাখত। এখন সে কিছু বললে তাপু চেঁচিয়ে ওঠে—মেয়েকে তুমি পাঁচ মিনিট দেখার সময় পাও? চব্বিশ ঘণ্টার কতক্ষণ তুমি বাড়িতে থাক? মেয়ের খাওয়া, পরা, পড়ানো, ঘুম পাড়ানো এর কোনোটাতেই তোমাকে পাওয়া যাবে না, শুধু শাসন করলে তোমার মাথাব্যথা বেড়ে ওঠে।

Read more


একটা ছেলে ডান হাত দিয়ে লম্বা শিক ধরে আছে। সে ধরার জায়গাটা কাপড় দিয়ে মুড়ে রেখেছে। বোঝাই যাচ্ছে শিকটা গরম। সে গরম দিয়ে দিয়ে চোখ তৈরি করছিল- অদ্ভূত মুখোশের। সেই ছৌয়ের মুখোশটা বীভৎস একটা মুখ। বীভৎস আর অদ্ভূত। মুখোশেটায় চোখের জায়গাটা আঁকার পর একটা গর্ত করতে হয় আর ছ্যাঁতততত ছ্যাঁতততত আওয়াজ করে চোখ তৈরি করা চলতে থাকে।

Read more


রঙ ময়লা হলেও চোখের চাহনি বড় মায়ায় ভরা। দেখে নিবারণ। মেয়েটাও অবাক হয়ে দেখে নিবারণকে। ওপারের চশমার কারখানায় কাজ করে। কারখানা বন্ধ হলে বেলাবেলি বাড়ি ফেরে।তবে এই ঘাটে পেরোয় না।

Read more


সেদিনের ছবিটা আজ এতগুলো বছর পরেও পরিষ্কার । মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছিল অলীকের কথা। বক্তৃতা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও কয়েকটা মুহূর্ত দাঁড়িয়েছিল করিডরে । তারপরে ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়েছিল ছেলেটার সামনে । কে দেখছে, কি ভাবছে, এসব চিন্তা মাথাতেই আসেনি । সরাসরি বলেছিল,' আমি অনন্যা । ফাইনাল ইয়ার পল সায়েন্স । আপনি এতক্ষণ যা যা বললেন তা কি কোনোদিন সম্ভব হবে আমাদের দেশে?'

Read more


কশিরন ভাবে সব জায়গা এসি হলে কতটা টাকা লাগতে পারে। হিসেব করতে পারে না।।এসির দাম তার জানা নেই। পাখা একটা লাগানো আছে তার বড়বেটার ঘরে কিন্তু তার দামও জানা নেই তার। কখনো সখনো পাখার হাওয়া খাবার সৌভাগ্য হয়েছে তার কিন্তু সব সময় না। আর পাখা লাগাবেই বা কোথাও। পাখা লাগানোর জন্য ছাদ চাই।

Read more


নির্দেশিকা জারি করল চৌকিদার— • কাজের কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকবে না। যতক্ষণ দিনের আলো থাকবে, যতক্ষণ অধস্তনেরা মনে করবে, ততক্ষণই কাজ চলবে। • সকল মজুর কাজ করতে বাধ্য থাকবে। • জ্বালানির জন্য তারা কয়লার গুঁড়োই পাবে, কয়লা নয়। • কাজ চলাকালীন কোনও মজুরের মৃত্যু ঘটলে তার পরিবারের একজনকে কাজে বহাল করা হবে। সবটা গড়গড় করে পড়ে চৌকিদার ফিরে গেল...তারপর কি হল?

Read more


রাত ঘন হয়ে এল আরও। এবার বিশ্রাম নেবার আয়োজন করতে হবে ওদের। রুনার এত তাড়াতাড়ি ঘুম আসে না। সে তার সিটে গিয়ে ম্যাগাজিন নিয়ে বসল। ইয়াসিনের দেরি করলে চলবে না, সারাদিনে অনেক কাজ করার আছে। তার সঙ্গীসাথীরা এই ট্রেনেই অন্য কামরায় আছে।

Read more


তিনি আজন্মের পথিক এই রসের ভিয়ানে । চলাই জীবন। প্রতিপক্ষের কাদা-পাঁক যত ছিটকে এসে পড়বে ধোপদুরস্ত কাপড়ে ততই জীবনের কামড় অনুভূত হবে, চলার অর্থ খুঁজে পাওয়া যাবে । জীবন চলুক এভাবেই । শেষ কোথায়, কতদূরে……কিভাবে ? তাই জানতেই তিনি আজও পথিক…….জীবন পথের পথিক……

Read more


নিজের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে দেখতে পায় নিজেরই গলায় দড়ির সরু দাগ । আত্মহত্যাপ্রবণতা এসব ভারী ভারী কথা ক্রমশ ওর নিজেরই কাছে হালকা হয়ে আসে ।

Read more


এবার মৌলভীর ফতোয়াতে নিজের জন্য নয়, বাড়িতে মা কোনও বিড়ম্বনায় পড়বে কিনা ভেবে শঙ্কিত হচ্ছি। আমার জন্য মায়ের জানাজা-কবর গাঁয়ের লোকে হারাম করে দেবে না তো? মায়ের যে বড় সখ! হ্যাঁ, সখই। আমার আব্বা যেখানে শায়িত আছেন, সেই কলাপুকুরের পাড়ে বেলগাছের ছায়ায়, মাত্র তিন বাই সাত ফুট মাটি।

Read more


হঠাৎই ঘুম ভেঙ্গে যায় তোতার পাশে অমিত নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। কি বিরক্তিকর আওয়াজ। দিনে অকারণে চিৎকার করে আর রাতে বিশ্রী নাক ডাকে। প্রেম ভালোবাসা বলতে শুধু বোঝে শরীর। তোতার গা ঘিন ঘিন করে। শহর জুড়ে এখন প্রেমের মরসুম, সেই ভালবাসা, মন্দবাসার গল্প লিখলেন মৌসুমী রায়।

Read more


ডিভোর্স শব্দটাকে অভিধানের ঘেরাটোপ থেকে বার করতে মানুষ বড় ভয় পায়। খাঁচার পাখি উড়তে গিয়ে যদি মাথা ঘুরে পড়ে যায়? আমাদের ঘরবাড়ির বাইরের দেওয়ালের রঙটা ঝকঝকে রাখতেই হয়, তা সে ভিতরে যতই চামচিকে বাসা বাঁধুক না কেন! *মেঘ-অরণ্যকথা* র গল্প লিখলেন অনিন্দিতা দে।

Read more


এসব নিয়ে বলার সময় আর আসুক, আমি চাইনা। আসলে অজস্র নেই নিয়ে আমার যে চারপাশ, ভালবাসা সেখানে আছে কিনা বা থাকলেও আমার বোধ্য নয়। যেজন্যে মনে হয়, আমিও কাউকে ভালবাসতে পারিনি । যদি কখনও পারি বা সেই বোধ খুঁজে পাই, তোকেই জানাব।

Read more


এই প্রতিভা নিয়ে সে জীবিকা অর্জন করতে পারবে সেটা ফ্রাউ ফ্রিডা কোন দিনও ভাবেনি। কিন্তু ভিয়েনার নিষ্ঠুর ঠান্ডায় জীবন অতিবাহিত করা তার পক্ষে দুঃসহ হয়ে পড়ল। তারপর সে বসবাস করার জন্য প্রথম যে বাড়িটা পছন্দ হল সেখানে কাজের খোঁজ করল। যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হল সে কি কাজ পারে সে নিপাট সত্যটাই বললঃ “আমি স্বপ্ন দেখি”।

Read more


মেঘবালিকা শব্দ করে কাঁদে মেঘবালিকা শব্দ করে হাসে মেঘবালিকার বুকের মাঝে ব্যথা মেঘবালিকার মৃত্যু শ্রাবণ মাসে।

Read more


সত্যি দলিতরা কী কী কাজ করতে পারে তা অতি দীর্ঘ এক প্রকল্পনাই বটে যার সঙ্গে স্কুলের সামনের দোকানটি বন্ধ থাকবে কিনা, মানব চেনের বাবুদিগের প্রতিবাদের মতো একশো দিনের মাথায় মাটির ঝুড়ি সারিবদ্ধ দলিতের নিরবিচ্ছিন্ন কনভেয়ার বেল্ট থাকবে কিনা, ইতিহাস - ভূগোল আর দেড় হাজার পাতার বইয়ের নিখুঁত পৃথিবী নির্যাস সংযোগ ছাড়াই লেখার মতলব হতে থাকবে। সহমনের গল্প বিভাগে লিখলেন উপল মুখোপাধ্যায়

Read more


ছেলেটাকে আমার সেই পুরনো পাড়াটা, আমার সেই ডাং-গুলি চোর-চোর খেলার দিনগুলিকে দেখানোর ইচ্ছে হচ্ছিল খুব। সেই সব ভাঙা পুকুর পাড়, কুলগাছ। সেই ফাঁকা প্লট, পাখির ডাক। এক সেই প্রাইমারি স্কুলটাই টিকে আছে কোনও মতে।

Read more


এর মধ্যেই বয়সভিত্তিক বেশ কিছু প্রতিযোগিতায় দারুণ ফুটবল খেলার পরিচয় রাখতে শুরু করেছে প্রমিত। স্কুল পর্যায়ের এক প্রতিযোগিতায় হ্যাটট্রিক করায় কাগজেও নাম বেরল প্রমিতের। গর্বে ফুলে উঠল অসিতবাবুর বুক। ছেলে বড় ফুটবলার হবে।

Read more


আমাদের কুলদেবতা ভদ্র। তার ইচ্ছায় আমাদের গোষ্ঠীতে পড়াশোনার চল শুরু হয়েছে। মেয়েটির মৃত্যুর প্রসঙ্গে,যাঁরা আমাদের মধ্যে শিক্ষিত,তাঁরা পুনরায় মহান ব্যাক্তিদের উক্তি স্মরণ করলেন পৃথিবীতে শুধুমাত্র একটিই ভালো আছে,জ্ঞান। আর একটিই খারাপ আছে,অজ্ঞতা।

Read more


পরদিন সকলের উত্তেজনার নিরসন ঘটিয়ে এবার দু’জনে ফোন স্ক্রিনের সামনে এসে হাজির। আজ দোয়েল মিহিরের দেওয়া একটা সুতির টপ পরেছে। তাতে খুব সুন্দর কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের ছবি আঁকা। দোয়েল কলেজ স্ট্রিট চেনে।মায়ের সঙ্গে গিয়েছে গেল বার।

Read more


এই রকম ঝামেলা থেকে অট্টহাসতলা আর সোনারুন্দি থেকে বহু লোক এসে শিমুলিয়া গ্রামে আজাদ মির্জার বাড়ি আক্রমণ করে। তার গোয়ালের গরু নিয়ে পালায়। আজাদ মির্জা তালেবর লোক। সে পার্টি করে। তার হয়ে কথা বলবে, দরকারে লাঠি ধরবে, এমন লোকের সংখ্যাও কম নয়। যারা অট্টহাসতলা আর সোনারুন্দি থেকে এসেছে, তারা কেউ নারান পণ্ডিত বা সোমেন চক্রবর্তীর চেনা লোক নয়। গুলি বোমা পিস্তল এনে আজাদ মির্জার বাড়ি তছনছ করে পোস্টার লাগিয়ে গিয়েছে, গোমাতার কোনও অপমান তারা সহ্য করবে না! এই সময়ের একটি গল্প লিখলেন শামিম আহমেদ

Read more


লোকটি রঙ বদলায়।কিন্তু এই রাতের অন্ধকারে নদীর বালিতে কেবলই একাএকাই লুকোচুরি খেলছে গণশা,অন্ধকার জোছনা হয়ে বালিতে ছবি আঁকছে।দেখে পাগল বলবেরে তকে উটে আয়।কে যেনো ডাকে গণশাকে।

Read more

by আয়েশা খাতুন | 28 November, 2020 | 0 Comment(s) | 1553 | Tags : Short Story


এখানে বাতাসে বিষ নেই। শহর থেকে দূরে। চিমনির কালো ধোঁয়া,গাড়ির আওয়াজ কিচ্ছুটি নেই। রান্নাঘরের তাড়াও নেই। মনে পড়ল,আজ ধ্যানের ক্লাস আছে। নিয়ম মেনে। ঘন্টা খানেক। সবই নিয়মের। মেনে চলেন। মানিয়ে চলেন। জীবন। নতুন বাড়ি। নতুন পরিবার!

Read more


অচ্ছুত, চিত্রার ছেলে এবং অনাথনামা-- সহমনের গল্প বিভাগে আজ থাকলো তিনটি অণুগল্প

Read more


দুই বাংলা মিলিয়ে বেঁচে থাকা লেখক ছোট-গল্প ও সাহিত্য-চর্চায় প্রায় নবীন। জন্মসাল ১৯৮৫। সৃজন সাহিত্য নামে পত্রিকার সম্পাদক। ২০১৩ সালে অস্থির ঢাকা ঘুরে লিখেছিলেন, শাহবাগ আন্দোলন ও চলমান বাংলাদেশ, এই নামের এক ডকুমেন্টারি পুস্তিকা।

Read more

by বিষ্ণু সরকার | 06 November, 2020 | 2 Comment(s) | 1438 | Tags : short story


যখন সব বাড়তি সেন্টুরা কাদার মধ্যে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতে দেখা যায় সে সময় বারান্দার বাতাসে দিল্লী থেকে ভেসে আসা জয় ভীম, লোহিয়াজির নারা, জগদীশবাবুর ইনকিলাব আর ছোটানাগপুরের উলগুলান চাঙ্গা করে তুলছে হাথরসের কাহানিমালা।

Read more


গাফফার সানাউল্লামাস্টারের কুরবানির উটটাকে দেখছে। উটটা বুঝি খিদের জ্বালায় জাবর কাটছে! তার দুই কষা বেয়ে সাদা সাদা ফ্যানা গড়িয়ে পড়ছে। যা দেখে গাফফারের মনে হচ্ছে, তার অবস্থাও ওই উটটার মতো। সেও জাবর কাটছে। তবে পার্থক্য যেটুকু- উটটার মতো তার কষা বেয়ে সাদা সাদা ফ্যানা গড়িয়ে পড়ছে না। পড়বে কী করে? আসলে সে তার মুখে জমা ফ্যানা গিলে গিলে খাচ্ছে, নিজের পেট ভরাচ্ছে।

Read more


সেই নিবিড় সময়ে লোকটা এসে দাঁড়ায়। ফাঁকা বেঞ্চটায় এসে বসে। গোবিন্দকে দেখে। গোবিন্দও সেদিকে তাকায়। লোকটার গায়ের চামড়া পুড়ে যাওয়া, রোদে গোটানো। মাথায় উসকোখুসকো চুল। চোখ মুখে ক্লান্তির ছাপ। আবার সেই চেহারায় কোথায় যেন লুকানো ভরা অতীতের ছাপ। এমন লোক তো আশপাশের মানুষ নয়!

Read more


এতদিন যখন হয়নি, আর হবে না। ইদ্রিস কাকা আক্রান্ত হবার ভয় ফুৎকারে উড়িলে দিলেন। মুখে মৃদু হাসি। যেন ইতোমধ্যে জয় করে ফেলেছেন কিছু। এদিকে ডিমের দাম ছয়। গেছিলেন এক ক্রেট ডিম কিনতে। কেনা হল মোটে দশটা। সংসারে ডিম ছাড়াও তেল লাগে, নুন লাগে, শাক-সব্জি-মশলাপাতি লাগে। সেইদিকে নজর দিতে গিয়ে একেবারে দুম-ফটাস।

Read more


একটা সফটওয়্যার যেখানে নামের বানান ঠিক করা যায়, এমনকি ট্রাইবালদেরও! তা থেকে গাছপালা, বন্যজন্তু, শাপ, পাখপাখালি, গাছ-কাটা, শ’মিল— সব বেরচ্ছে বানান ছাড়া। মেরুনা মুর্মু বা অন্য আদিবাসী সাঁওতালের সঙ্গে কি শুধু জঙ্গলের সম্পর্ক, বানানের কোন সম্পর্কই নেই?

Read more


ফুচিক আলাদুমবার যাবে বলে বেরিয়েছিল। বাস কন্ডাকটর বলল, “কোথায় যাবেন?” ... সময় নেই ঘন্টা নেই আইন নেই মজুরি নেই... আজকের সময় নিয়ে ৩টি ছোট গল্প লিখলেন উপল মুখোপাধ্যায়

Read more


এই সময় নিয়ে ৩ টি অণু গল্প লিখলেন ব্রতী মুখোপাধ্যায়।

Read more